নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ফেরদৌসী আক্তার রেহেনা। এক সময় তিনি ছিলেন আপাদমস্তক আওয়ামী লীগ সমর্থক। নৌকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, ব্যানারে তার উপস্থিতি ছিল নিয়মিত। বিশেষ করে গড ফাদার শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে তিনি পেয়েছিলেন প্রভাবশালী অবস্থান।
২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে নৌকায় সিলমেরে সে সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোডও দিয়েছিলেন রেহেনা। তবে জুলাই অভ্যুত্থানের পর নৌকার এই নেত্রী পুরোদস্তুর আওয়ামী বিরোধী সেজেছেন। আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যোগ দিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিতে। ভাগিয়ে নিয়েছেন মনোনয়ন। নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসন থেকে ঈগল প্রতীকে নির্বাচন করবেন তিনি। করছেন সভা সমাবেশও। রেহেনার এমন রাজনৈতিক রূপান্তরে হতবাক স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার সক্রিয়তা এতটাই প্রকাশ্য ছিল যে, প্রতিটি সভা-সমাবেশে নিজে মিছিলের নেতৃত্ব দিতেন। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের শাসনামলে নিজ এলাকা সস্তাপুরে প্রভাব খাটিয়ে মানুষকে তটস্থ রাখতেন। ওসমান ঘনিষ্ট হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতো না। তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহ-সভাপতিকে বিয়েও করেছিলেন।
তারা আরো জানান, বিগত একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ফেরদৌসী আক্তার রেহেনা নারী ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে হুমকি দিয়েছেন এবং তার সামনে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করেছিলেন। যারা প্রকাশ্যে ভোট দিতে চাননি তাদেরকে মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে সেটা দেখাতে বাধ্য করেছিলেন। তারমতো আওয়ামী লীগের নেত্রীকে কিভাবে অন্য একটি দল মনোনয়ন দিলো সেটাই আমাদের বোধগম্য নয়।
তবে ফেরদৌসী আক্তার রেহেনার মনোনয়ন এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি বলে দাবি করেছেন এবি পার্টির দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, ১০৯টি আসনে আমাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসনে আমাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়নি। আমরা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেবো।
এক সময়ের আওয়ামী সমর্থক এখন নিজেকে আওয়ামী বিরোধী নেত্রী হিসেবে তুলে ধরছেন। তবে এলাকাবাসীর চোখে তিনি এখনো সেই পুরোনো রেহেনা যিনি রাজনীতির হাওয়া বুঝে রং বদলাতে জানেন নিখুঁতভাবে।