ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় দাঁড়িয়ে থাকা বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চালক জুলহাস মিয়া নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার ভোররাতে ফুলবাড়ীয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ বাজার এলাকা থেকে আনোয়ার হোসেন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফুলবাড়ীয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে নিহত বাসচালক জুলহাসের ছোট বোন ময়না আক্তার ফুলবাড়ীয়া থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃত ৩৬ বছর বয়সী আনোয়ার হোসেন ফুলবাড়ীয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি ওই এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ভোরে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া পৌরসভার ভালুকজান বাজারের পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে অগ্নিসংযোগের পর দগ্ধ হয়ে চালক জুলহাস মিয়া মারা যান।
নিহত ৪০ বছর বয়সী এই বাসচালক উপজেলার কৈয়ারচালা গ্রামের মো. সাজু মিয়ার ছেলে।
দীর্ঘদিন ধরে বাস চালিয়ে আসা জুলহাস ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছে।
ঘটনার দিন বাসটি গভীর রাতে ঢাকা থেকে এসে ফুলবাড়ীয়ার ভালুকজান বাজারে পেট্রোল পাম্পে অবস্থান নেয়। পুলিশ জানিয়েছে, সেখানেই ভোররাতে মাস্ক পরা তিন যুবক এসে পাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়।
সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সিসিটিভি ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “বাসটি রাতে ঢাকা থেকে এসেছিল। ঘটনার সময় বাসটিতে যাত্রী শাহিদ ইসলাম বাদশা (২০) এবং তার মা মোছা. শারমিন সুলতানা রুমকি (৪৫) অবস্থান করছিলেন। রাত বেশি হয়ে যাওয়ায় তারা বাড়ি যেতে পারেননি। ভোরে বাড়ি ফেরার আশায় বাসের ভেতরেই অবস্থান করছিলেন।”
“এ সময় মাস্ক পরিহিত তিন যুবক এসে আলম এশিয়া পরিবহনের বাসটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে বাসের গ্লাস ভেঙে বাদশা এবং তার মা রুমকি বেরিয়ে আসেন। এ সময় পড়ে গিয়ে রুমকি মাথায় আঘাত পান। তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশ সুপার আরও জানান, চালক জুলহাস ঘুমিয়ে থাকায় বাসের ভেতরে আটকা পড়ে দগ্ধ হয়ে সেখানেই মারা যান।
ওসি রোকনুজ্জামান বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”