এম সাখাওয়াত হোসেন বললেন
ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রতাসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত পাবনার নগরবাড়ী নৌবন্দর উদ্বোধন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পণ্য খালাসে আগের চেয়ে গতি বাড়বে প্রায় ১০ গুণ। রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস্থানও।
গতকাল শনিবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এর উদ্বোধন করেন।
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, আধুনিকায়ন ও বিনোয়োগ আনতে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি ব্যবস্থাপনায় দেওয়ার বিকল্প নেই, ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষায় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নয়নের অন্যতম একটি বড় জায়গা। কিন্তু গত ১৭ বছরে এখানে অনেক অনিয়ম হয়েছে, আমরা সেখান থেকে উত্তোরণের চেষ্টা করছি।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলে কম খরচে সহজে নদীপথে বিপুল পরিমাণ সার, কয়লা, সিমেন্ট, পাথরসহ অন্যান্য পণ্য আনা-নেওয়া হয় পাবনার নগরবাড়ী নৌবন্দর দিয়ে। এ কারণে নৌপথে পণ্য পরিবহনের সুবিধা বাড়াতে নগরবাড়ীতে আধুনিক নদীবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৫৬৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ৩৬ একর জায়গার ওপর ২০১৮ সালে বেড়া উপজেলার নগরবাড়ী ঘাটে যমুনা নদীর পাড়ে শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। চার বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের জুনে। তবে ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রতাসহ নানা জটিলতা থাকায় মেয়াদ বাড়ানো হয় দু’বার।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত এই নৌবন্দরে তৈরি হয়েছে ৩৬০ মিটার কংক্রিটের জেটি, টার্মিনাল, ওয়ারহাউস, গোডাউন, বাফার গোডাউন, ওপেন শেড, ওপেন স্টেজসহ দ্রুততম সময়ে পণ্য লোড-আনলোডের সব সুব্যবস্থা। স্থানীয়রা মনে করছেন, প্রকল্পটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পাল্টে যাবে এলাকার আর্থ সামাজিক চিত্র।
স্থানীয় ট্রাক চালক আমিনুল ইসলাম বলেন, বন্দরটা নির্মাণ হওয়ায় বন্দর এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়েছে। আধুনিক বন্দর হওয়ায় পণ্য আনা-নেওয়ায় গাড়ি চলাচল বাড়বে, যা আমাদের আয় বৃদ্ধি করবে। স্থানীয় শ্রমিক মোস্তফা কামাল বলেন, নতুন এই নৌবন্দরের ফলে আমাদের কর্মসংস্থান বাড়বে।
নগরবাড়ী-কাজীরহাট-নরাদহ নদীবন্দরের পোর্ট অফিসার মো. খাইরুজ্জামান বলেন, আধুনিক নৌবন্দর চালু হওয়ায় উত্তরবঙ্গ তথা দেশের মানুষ এই প্রকল্পের সুফল পাবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই নৌবন্দর ভূমিকা রাখবে। আগে যেখানে প্রতিদিন মালপত্র খালাস করা হতো গড়ে ২ হাজার টন, এখন সেখানে পণ্য খালাস করা যাবে অন্তত ২০ হাজার টন। অনুষ্ঠানে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমরেড আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম।