মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ এলাকার চা শ্রমিকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে না। মজুরি বৃদ্ধি, ভূমির অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগের প্রত্যাশা করছেন তারা।
মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনে প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ ভোটার। এ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিশাল চা শ্রমিক ভোট ব্যাংক হওয়ায় প্রার্থীদের প্রচারণার মূল কেন্দ্র হয়ে উঠেছে চা-বাগান এলাকা। প্রতিশ্রুতির বন্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা, আর শ্রমিকরা তুলে ধরছেন তাদের দীর্ঘদিনের দাবি-দাওয়া। গান্ধী ছাড়া চা-বাগানের নারী শ্রমিক সিতা মুন্ডা বলেন, নির্বাচনের সময় সবাই প্রতিশ্রুতি দেন, পরে ভুলে যান। আমরা চাই এবার আমাদের সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধান হোক।
শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁওয়ের এক শিক্ষক বলেন, শত বছর ধরে বসবাস করলেও চা-শ্রমিকদের ভূমির অধিকার নেই। সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ সীমিত। স্বল্প বেতন, অপুষ্টি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তাদের জীবনমান উন্নয়নে বড় বাধা। তার দাবি, অতীতে চা শ্রমিকদের ভোটে এমপি-মন্ত্রী হলেও তাদের ভাগ্যের খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি পঙ্কজ কন্দ বলেন, চা শ্রমিকদের অধিকার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি অনেকেই দিয়েছেন, কিন্তু কেউ কথা রাখেননি।’ তিনি নির্বাচনি ইশতেহারে শ্রমিক অধিকারের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।
বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী মুজিবুর রহমান চৌধুরী আমার দেশকে বলেন, ‘চা শ্রমিকরা বিগত দিনে আওয়ামী লীগকে একতরফা ভোট দিয়েছে, কিন্তু তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। আগামীতে প্রতিশ্রুতির চেয়ে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মহসিন মিয়া মধু আমার দেশকে বলেন, শ্রমিকরা যে প্রত্যাশায় ভোট দিয়েছে তা পূরণ হয়নি—বরং তারা প্রতারিত হয়েছেন। নির্বাচিত হলে ন্যায্য মজুরি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষিত চা-শ্রমিক সন্তানের কর্মসংস্থানসহ জীবনমান উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুর রব আমার দেশকে বলেন, জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও চা শ্রমিকরা বরাবরই অবহেলিত। তিনি নির্বাচিত হলে শ্রমিকদের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপের আশ্বাস দেন।
এনসিপির প্রার্থী প্রীতম দাস আমার দেশকে বলেন, দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেও চা-শ্রমিকদের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। তিনি বলেন, শ্রমিক, মালিক ও সরকারের সমন্বিত উদ্যোগেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।