বিশ্বব্যাংকের নাম ও লোগো ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎকারী আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। চক্রটি মূলত অনলাইনে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে কম সুদে ঋণ প্রদানের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করত।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিট সোহাগ হোসেন (৩৫) নামের প্রতারক চক্রের ওই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল রোববার সিআইডি থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সিআইডি জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত সোহাগ হোসেন একটি আন্তর্জাতিক ‘বিনিয়োগ ও ঋণ প্রতারণা’ চক্রের অংশ, যার মূল হোতা বিদেশে অবস্থান করছে। এ চক্র বিশ্বব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যাগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (আইএফএডি) এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার নাম, লোগো, ওয়েবসাইট ও ভুয়া পরিচয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকার বিপুলসংখ্যক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে অনলাইনে টাকা আত্মসাৎ করে আসছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত শুক্রবার লক্ষ্মীপুরের রায়পুর থানার সোনাপুর ইউনিয়নের রাজাবিয়া হাট এলাকার একটি আবাসিক ভবনে অভিযান চালিয়ে সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন, একাধিক বিকাশ ও নগদ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ও ব্যক্তিগত তথ্যসহ মোট ৯টি মোবাইল নম্বর ও অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য জব্দ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, সোহাগসহ প্রতারক চক্রের সদস্যরা সাধারণ জনগণের সঙ্গে প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে নিজেদের বিশ্বব্যাংকের ঋণ কর্মসূচির প্রতিনিধি পরিচয় দেয়। তারপর নিজেদের ‘লোন অফিসার, এমএসএস ইউনিট, কার্ড ডিভিশন, হেড অফিস, ঢাকা, বিশ্বব্যাংকের’ পদবিতে পরিচয় দিয়ে ২ শতাংশ সুদে ১০ লাখ টাকা ঋণ অনুমোদনের প্রলোভন দেখায়।
প্রতারকরা ভিকটিমদের https://bdworldloanprojectcw.com নামের একটি ভুয়া ব্যাংকিং ওয়েবসাইটের লিংক পাঠিয়ে সেখানে আবেদন করতে বলে। এরপর বিভিন্ন চার্জ, ভ্যাট, ইন্স্যুরেন্স ও প্রক্রিয়াকরণ ফি বাবদ একাধিকবার টাকা পাঠাতে বাধ্য করে।
সিআইডি জানায়, এভাবে বিকাশ ও নগদসহ অন্যান্য মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ধাপে ধাপে দুই লাখ ৪৭ হাজার প্রদান করে প্রতারিত হন এক ব্যক্তি। ওই ভুক্তভোগী পরে শাহজাহানপুর থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী সাইবার পুলিশ সেন্টারের সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট টিম প্রযুক্তিগত সহায়তায় বাংলাদেশে অবস্থানরত মূল সক্রিয় সদস্য লক্ষ্মীপুর জেলার বাসিন্দা সোহাগ হোসেনকে শনাক্ত করে। পরে গত ২৮ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।