আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা করা প্রত্যেক হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার না করলে ডিআরইউয়ের পক্ষ থেকে নতুন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব বলেও হুঁশিয়ারি দেন নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও প্রত্যাহার করতে হবে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে দৈনিক প্রথম আলো ও দ্যা ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা, দ্যা নিউএজ সম্পাদক সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হেনস্তা; ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোলায়মান হোসাইনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির এক মানববন্ধনে ডিআরইউয়ের নেতৃবৃন্দরা এসব কথা বলেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকার সাংবাদিকদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট আমলে আমরা যে কয়জন সাংবাদিক রাজপথে দাঁড়িয়েছিলাম, আজও আমরা সেই কয়জন সাংবাদিকরা উপস্থিত হয়েছি। গত ১৭ বছর আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা রাজপথে আন্দোলন করেছি। আমরা বাকস্বাধীনতা, মুক্ত গণমাধ্যম ও লেখার স্বাধীনতা চাই। অতীতে আবুল আসাদের উপর হামলার বিচার, নয়া দিগন্ত ও আমার দেশ পত্রিকায় আগুন লাগানোর বিচার আমরা নিশ্চিত করতে পারতাম, তাহলে দুর্বৃত্তরা এই সাহস পেত না। চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করতে পারতাম, তাহলে দুর্বৃত্তরা আজকে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা করার সাহস পেত না।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম বলেন, যদি আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান ও সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদের উপর হামলার বিচার হতো, নয়া দিগন্ত পুড়িয়ে দেওয়ার বিচার আমরা আদায় করতে পারতাম, তাহলে আজকে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের উপর হামলার সাহস কেউ করতে পারত না। মাহমুদুর রহমান ও আবুল আসাদের উপর হামলার বিরুদ্ধে একটা বিবৃতি দেওয়ার জন্য অনেকের কাছে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেদিন তারা সুশীলতা দেখিয়েছিল। সেদিন সুশীলতা না দেখিয়ে প্রতিবাদ করলে আজকের এই সাহস কেউ পেত না। আগামীতে সকল ভেদাভেদ ভুলে সাংবাদিকদের এক হতে হবে।
ডিআরইউয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম জসিম বলেন, প্রবীণ সাংবাদিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ, আমার দেশের সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান ও নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরকে মব সৃষ্টি করে হামলা নির্যাতন করা হয়েছে। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের উপর শুধু হামলা নয় বরং গণমাধ্যমকে বন্ধ করে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হয়েছিল। সাগর রুনিকে হত্যা করা হয়েছে। আজও বিচার হয়নি। এটা কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মিডিয়ার টুটি চেপে ধরছে, গণমাধ্যমকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মিডিয়ার স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। ১৫ শত মানুষ প্রাণ দিয়েছে, মব সৃষ্টি, গুম, খুন ও হত্যার বিরুদ্ধে। শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করবেন না। ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ করা যাবে না।
ডিআরইউয়ের কার্যনির্বাহী সদস্য মাহফুজ সাদী বলেন, গণমাধ্যম একটি বুদ্ধিবৃত্তিক জায়গা। আপনার ভিন্নমত থাকলে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মোকাবিলা করুন। সংগ্রাম, নয়া দিগন্ত, আমার দেশ, ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো পত্রিকা অফিসে হামলার আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি ডিআরইউ এর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোলায়মান হোসাইনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাহার করার আহ্বান করছি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির দপ্তর সম্পাদক রাশিন মোল্লা, ডিআরইউয়ের নারী বিষয়ক সম্পাদক পান্না, ডিআরইউয়ের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গাজী আনোয়ার, ডিএম ওমর, নাদিয়া শারমিন, কুদরত-ই খুদা, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক নারী বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা রোজী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সিনিয়র সদস্য মতি মল্লিক, আহমেদ আতিক প্রমুখ।