জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত কনসার্টে অনুদান দিয়েছেন ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভিক জবিয়ান’প্যানেলের জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা ও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক প্রার্থী তাকরিম আহমেদ।
রোববার সন্ধায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এক কনসার্টে এই আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, খাদিজাতুল কুবরা কনসার্টের মঞ্চে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন। এসময় তিনি কনসার্টে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেয়ার ঘোষণা দেন। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী তাকরিম আহমেদ ছাত্রদলের পক্ষ হয়ে ৩০ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন।
ক্যান্সার আক্রান্ত ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী মীর নূর নবীর চিকিৎসার জন্য এই চ্যারিটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়। কনসার্টের অনুমতিপত্রে নির্বাচন কমিশন শর্ত দেয়, ‘কনসার্টের মঞ্চে কোন স্বতন্ত্র/প্যানেল এর প্রার্থী উপস্থিত থাকতে পারবে না।’
কনসার্ট মঞ্চে উঠে জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা ঘোষণা দেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি ৫০ হাজার টাকা ফান্ড রেইজ করেছি। আপনারা সবাই আমাকে দোয়ায় রাখবেন, যাকে ভবিষ্যতেও আপনাদের পাশে থাকতে পারি।’
মঞ্চে উঠে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী তাকরিম আহমেদ ঘোষণা দেন, ‘আমি ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ৩০ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা দিচ্ছি। এই টাকাটা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ জবি ছাত্রদলের যে কমিটি, তাদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে।’
এদিকে মনোনয়ন জমা দেয়ার পর ছাত্রীহলের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে স্যানিটারি প্যাড, মগ বিতরণসহ নিজের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করার অভিযোগ রয়েছে খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে।
জকসু আচরণ বিধিমালার নির্বাচনি প্রচারণা সংক্রান্ত বিধি ৫(গ) তে উল্লেখ আছে, ‘মনোনয়ন পত্র বিতরণ শুরুর আগের দিন থেকে নির্বাচনি ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও কল্যাণমূলক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
এছাড়া আচরণবিধিমালার নির্বাচনি প্রার্থীর খরচ সংক্রান্ত বিধি ১৭ (ক)তে উল্লেখ আছে, ‘একজন প্রার্থী হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের জন্য সর্বোচ্চ ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) টাকা এবং কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সর্বোচ্চ ১৫,০০০/-(পনেরো হাজার) টাকা ব্যয় করতে পারবেন। বিধি ১৭(খ)তে বলা আছে, ‘নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ‘আমি প্রার্থী হিসেবে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে কনসার্টে উপস্থিত হয়েছি। আর ৫০ হাজার টাকা আমি নিজের থেকে দেয়নি। আমার ফান্ড রেইজ করার সুযোগ ছিল, তাই আমি ফান্ড রেইজ করে দিয়েছি।’
সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক প্রার্থী তাকরিম আহমেদ বলেন, ‘আমি প্রার্থী হিসেবে নয়, একজন কো অর্গনাইজার হিসেবে কনসার্টে গিয়েছি। ছাত্রদলের অনুদানের পরিমাণটা আমি ঘোষণা দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে জকসু নির্বাচন কমিশনার সহযোগী অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান বলেন, ‘একজন আমাকে ভিডিওটি পাঠিয়েছে, আমি ভিডিওতে দেখেছি। আলোচনা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’