হোম > ফিচার > তথ্য-প্রযুক্তি

কম্পিউটার স্লো হয়ে কেন

আরিফ বিন নজরুল

কম্পিউটার ধীর হয়ে গেলে কাজের গতি কমে যায়। বিরক্তি বাড়ে এবং উৎপাদনশীলতা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অথচ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ধীরগতির এই সমস্যাগুলো তৈরি হয় কিছু সাধারণ কারণে। যেমন : অতিরিক্ত ব্যাকগ্রাউন্ড সফটওয়্যার। অপ্রয়োজনীয় স্টার্টআপ অ্যাপ। কম RAM অথবা পুরোনো হার্ডড্রাইভ।

সুখবর হলো, সামান্য কিছু পরিবর্তনেই কম্পিউটারের গতি চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পায়। নিচে কম্পিউটার দ্রুত চালানোর কিছু কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো, যা অনুসরণ করলে আপনার পিসি আবার হবে আগের মতো দ্রুত ও চটপটে।

প্রথমেই অপ্রয়োজনীয় স্টার্টআপ প্রোগ্রাম বন্ধ করা জরুরি। অনেক সফটওয়্যার ইনস্টল করার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টার্টআপে যুক্ত হয়ে যায়। ফলে কম্পিউটার চালু হতে সময় নেয়। টাস্ক ম্যানেজার (Task Manager) থেকে স্টার্টআপ ট্যাবে গিয়ে এসব অ্যাপ বন্ধ করে দিলে বুট টাইম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে। একইভাবে, ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা অ্যাপ বন্ধ করলে RAM ও CPU-তে চাপ কমে। ফলে কম্পিউটার দ্রুত সাড়া দেয়।

এছাড়া নিয়মিত টেম্পোরারি ফাইল, ক্যাশ ও জাংক ফাইল পরিষ্কার করা উচিত। ব্রাউজার, সফটওয়্যার ও অপারেটিং সিস্টেম প্রতিদিনই অনেক অস্থায়ী ফাইল তৈরি করে, যা স্টোরেজ ভরে ফেলে এবং পারফরম্যান্স ধীর করে দেয়। উইন্ডোজের Disk Cleanup, Storage Sense বা তৃতীয় পক্ষের নির্ভরযোগ্য টুল ব্যবহার করে এগুলো পরিষ্কার করলে কম্পিউটার অনেকটাই হালকা হয়।

কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতির একটি হলো SSD ব্যবহার করা। পুরোনো HDD স্টোরেজ স্লো। শব্দ করে এবং রিড-রাইট স্পিড কম। SSD-তে রূপান্তর করলে বুট টাইম কয়েক মিনিট থেকে নেমে আসে কয়েক সেকেন্ডে এবং সফটওয়্যার লোডিংও হয় ঝটপট। যারা এখনো HDD ব্যবহার করছেন। তাদের জন্য SSD আপগ্রেড সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

RAM বৃদ্ধি করাও গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক সফটওয়্যার ও ব্রাউজারগুলো বেশ বেশি RAM ব্যবহার করে। 4GB RAM দিয়ে আজকের দিনে স্মুথ কাজ করা খুবই কঠিন। 8GB বা 16GB RAM ব্যবহার করলে মাল্টিটাস্কিং অনেক সহজ হয় এবং সিস্টেম ল্যাগ কমে।

নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট কম্পিউটারের গতি বাড়াতে সাহায্য করে। উইন্ডোজ, ড্রাইভার বা অ্যাপ আপডেটগুলো শুধু নতুন ফিচারই আনে না। অনেক সময় পারফরম্যান্স অপ্টিমাইজেশনও যুক্ত করে। পুরোনো ভার্সন চলার কারণে সিস্টেম ধীর হওয়াই স্বাভাবিক।

অনেক সময় ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার সংক্রমণ কম্পিউটারকে অস্বাভাবিকভাবে স্লো করে দেয়। তাই একটি বিশ্বস্ত অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করে নিয়মিত স্ক্যান করা উচিত। ম্যালওয়্যার ব্যাকগ্রাউন্ডে CPU ব্যবহার করে, ডেটা পাঠায় এবং সিস্টেমকে হ্যাং করে। ফলে গতি মারাত্মকভাবে কমে যায়।

আরো একটি সহজ কিন্তু জরুরি অভ্যাস হলো ডেস্কটপ পরিষ্কার রাখা। অনেকেই ডেস্কটপে অসংখ্য ফাইল, ফোল্ডার ও শর্টকাট রেখে দেন, যা সিস্টেম লোডের সময় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। ডেস্কটপে কম আইটেম থাকলে কম্পিউটার দ্রুত রেসপন্স করে।

যারা দীর্ঘদিন ধরে সিস্টেম ব্যবহার করছেন। তাদের জন্য কখনো কখনো ফ্রেশ উইন্ডোজ ইন্সটল করা প্রয়োজন হয়ে যায়। পুরোনো সিস্টেমে অব্যবহৃত রেজিস্ট্রি, করাপ্ট ফাইল, ড্রাইভার কনফ্লিক্ট ইত্যাদি জমে গিয়ে পারফরম্যান্স কমায়। ফ্রেশ ইনস্টলেশন পিসিকে নতুন শক্তি দেয়।

সবশেষে, হার্ডওয়্যার পরিষ্কার রাখা এবং কুলিং সিস্টেম ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। ধুলাবালি জমে গেলে ফ্যানের গতি কমে যায়। প্রসেসর অতিরিক্ত গরম হয়। আর তখন কম্পিউটার ইচ্ছা করেই গতি কমিয়ে দেয় (থ্রটলিং)। তাই নিয়মিত ফ্যান, হিটসিঙ্ক ও ভেন্ট ভালোভাবে পরিষ্কার করা উচিত।

সব মিলিয়ে বলা যায়, কম্পিউটারের গতির সমস্যা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এর সমাধানও ততটাই সহজ। সামান্য যত্ন, সঠিক অভ্যাস এবং প্রয়োজনীয় আপগ্রেড। এই তিনটির সমন্বয়েই পিসি চলবে দীর্ঘদিন দ্রুত, স্মুথ এবং নির্ভরযোগ্যভাবে। ডিজিটাল যুগে সময়ই সবচেয়ে মূল্যবান। আর দ্রুত কম্পিউটারই পারে সেই সময়কে আরো কার্যকর করে তুলতে।

ফরেনসিক এসইও কীভাবে কাজ করে

অ্যাপ পারমিশনের ফাঁদে তথ্য

সোশ্যাল মিডিয়ায় এআই

যে সেটিংস বন্ধে গুগল-ফেসবুক জানবে না ব্যক্তিগত তথ্য

রোববার ঢাকাসহ সারা দেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ

ইউটিউবের নতুন ফিচার যা যা থাকছে

আনঅফিশিয়াল ফোন নিয়ে সবশেষ যা জানাল বিটিআরসি

এনইআইআর চালু হলে ব্যক্তি ও সামাজিক নিরাপত্তা বাড়বে

অ্যাপ বেশি রাখলে স্মার্টফোনে ধীরে চলে?

বাংলাদেশে অল্প সময়ে চার ভূমিকম্প, কীসের ইঙ্গিত