জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির ফাঁসির আদেশ ঘোষণায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার তিন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
গতকাল সোমবার বিকালে এক প্রতিক্রিয়ায় তারা দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান। এ সময় আন্দোলনে আহত যোদ্ধারাও তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দুই শিক্ষার্থী ও একজন বিশ্ববিদ্যালয়কর্মী শহীদ হন। ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের পরিবারের কান্না এখনো থামেনি।
উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের মহিষাদী এলাকার শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্তর বাবা জাকির হোসেন বলেন, জুলাইয়ে যেসব ছেলে শহীদ হয়েছে, তাদের প্রত্যেক পরিবারের দাবি, শুধু ফাঁসির রায় দিলেই হবে না, খুনি হাসিনাকে দ্রুত ভারত থেকে এনে রায় কার্যকর করতে হবে। হাসিনা দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। বিচারের রায় নিয়ে কোনো টালবাহানা দেখতে চাই না। গত বছরের ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম শহরের মুরাদপুর ২ নম্বর গেট এলাকায় কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ শান্ত।
আন্দোলনে নিহত আরেক ছাত্র রাকিব হোসাইন (২৯), বাবুগঞ্জ উপজেলার মানিককাঠি গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেনের ছেলে। ৫ আগস্ট আন্দোলনের বিজয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। রাকিবের বড় ভাই আবুল কালাম বলেন, আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই, দ্রুত হাসিনাকে ভারত থেকে এনে রায় কার্যকর করা হোক।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফ আবদুল্লাহ আল আবির (২৮) গত বছরের ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন। ২০ জুলাই তিনি মারা যান। বিভিন্ন জটিলতা শেষে ২১ জুলাই রাতে বাবুগঞ্জের বাহেরচর ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামে দাফন করা হয়। আবিরের মা পারভীন সুলতানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে শহীদ হয়েছে। তার বিজয় হয়েছে। কিন্তু সে দেখে যেতে পারল না। রায় কার্যকর হওয়াই এখন আমাদের একমাত্র দাবি।
শহীদ পরিবারের অভিন্ন দাবি, ফাঁসির রায় শুধু ঘোষণায় সীমাবদ্ধ না রেখে দ্রুত কার্যকর করতে হবে, যাতে তারা ন্যায়ের পূর্ণতা দেখতে পারেন।