হোম > জুলাই বিপ্লব

গুলিতে মগজ আলাদা হয়ে যায় শহীদ আলমগীরের

ইয়াকুব নবী ইমন, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

আমার স্বামী বাস চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ৫ আগস্ট তার ডিউটি ছিল না। তিনি বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। সেদিন দুপুরে রাজধানীর উত্তরার রাজলক্ষ্মীতে গিয়েছিলেন পরিস্থিতি দেখতে। সেখানেই পুলিশের গুলিতে মারা যান তিনি। গুলিতে তার মাথার মগজ আলাদা হয়ে পড়ে ছিল। তার কবরে আলাদা পলিথিনে মগজসহ দাফন করা হয়েছে।’

কথাগুলো বলছিলেন ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে নিহত বাসচালক আলমগীর হোসেনের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম। শহীদ আলমগীর নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের কাজিরখিল গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মো. শাহজাহান। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ঢাকার উত্তরার রাজলক্ষ্মী এলাকায় পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন।

এদিকে আলমগীরের নিহত হওয়ার এক মাস না যেতেই স্ত্রীর কোলজুড়ে আসে বহুল আকাঙ্ক্ষিত কন্যাসন্তান। কিন্তু মেয়ের চোখ জুড়ানো হাসি দেখার সৌভাগ্য হয়নি শহীদ আলমগীরের। বিষয়টি নিয়ে স্ত্রী হোসেনে আরা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, ‘দুই ছেলের পর তার ইচ্ছে ছিল একটি মেয়ের বাবা হওয়ার। প্রায়ই বলতেন, আল্লাহ তো তোমাকে দুটি ছেলে দিয়েছেন, আমাকে যদি একটি মেয়ে দিতেন’…। ২৯ সেপ্টেম্বর আমি কন্যাসন্তানের জন্ম দিলাম। কিন্তু তার আর মেয়ের মুখে বাবা ডাক শোনা হলো না।’

এক কন্যা ছাড়াও আলমগীরের দুই পুত্রসন্তান রয়েছে। আলমগীর নিহত হওয়ার সময় হোসেনে আরা বেগম স্ত্রী ছিলেন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আলমগীর হোসেন ঢাকায় বাস চালিয়ে পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করতেন। তবে তার মৃত্যুতে এখন চোখে অন্ধকার দেখছে পরিবার। একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে এখন দিশাহারা পুরো পরিবার। দুই ছেলে ও এক মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও দুচিন্তায় স্ত্রী। এ বিষয়ে স্ত্রী হোসেনে আরা বেগম বলেন, ‘এগুলো ভাবতে গেলে চোখ অন্ধকার হয়ে আসে। আল্লাহ জানেন আমাদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে।’

এলাকাবাসী জানান, আলমগীর খুব ভালো মানুষ ছিলেন। কখনো এলাকার কারো সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি। আলমগীরের মৃত্যুর প্রায় ৫ মাস হতে চলেছে। স্ত্রীর কোলে মাত্র কয়েক মাস বয়সের কন্যাসন্তান। সন্তানদের কথা চিন্তা করে প্রায়ই অঝোরে কাঁদছেন আলমগীরের স্ত্রী। এ‌ কারণে এই অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাছরিন আকতার জানান, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমরা ইতোমধ্যে আলমগীর হোসেনের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সরকারি কোনো সহযোগিতা এলে আলমগীরের পরিবার পবে। উপজেলা প্রশাসন সব সময় পরিবারটির পাশে থাকবে।’

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘আমি যোগদানের পরপরই বিভিন্ন উপজেলায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আলমগীর হোসেনের বাড়িতেও গিয়েছি। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ৫ আগস্ট আন্দোলনে নিহত ও আহতদের তালিকা করে তাদের পরিবারকে যথাযথ সহযোগিতা করা হবে।’

বিকেএসপিতে জুলাই বিপ্লবে আহত যোদ্ধাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের সনদ প্রদান

দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর চায় শহীদ শিশুদের পরিবার

বাবুগঞ্জে ৩ শহীদ পরিবারের প্রতিক্রিয়া, ‘রায় ঘোষণা নয়, দ্রুত কার্যকর চাই’

জুলাই যোদ্ধাকে বাদী সাজিয়ে বানোয়াট মামলা

অর্থাভাবে অপারেশন করাতে পারছেন না জসিম

মাদরাসা ও সংসার হারিয়ে দিশেহারা জুলাইযোদ্ধা শফিকুর

গুলি খেয়ে কাতরাচ্ছিলেন তাইম, দাঁড়িয়ে উপভোগ করছিল পুলিশ

স্বামী হত্যাকারীদের ফাঁসি চান শহীদ মিজানুর রহমানের স্ত্রী

টিয়ারশেলের স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন রাফি

অবহেলার শিকার শহীদ নুরুল মোস্তফার পরিবার