আমার দেশকে ড. দিলারা চৌধুরী
পলাতক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতায় নতুন নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। আওয়ামী লীগের এই প্রধানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যখন বিচার শেষে রায়ের জন্য ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে, ঠিক সেই সময়ে হঠাৎ করে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তার সাক্ষাৎকার প্রচারের মাধ্যমে দিল্লি নতুন খেলায় নেমেছে।
বুধবার রয়টার্স, এএফপি, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রথমবারের মতো দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জুলাই গণহত্যার জন্য তার ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আওয়ামী লীগ ছাড়া আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেই ভোট বয়কট করবে দলটির লাখ লাখ নেতাকর্মী। তার দলকে বাদ দিয়ে হওয়া নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকারই গঠন হোক তাদের সময়ে তিনি দেশে ফিরবেন না, বরং ভারতেই অবস্থান করবেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের নতুন চাল ও ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে আন্তর্জাতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, আগামী নির্বাচন বানচালের পাশাপাশি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায়কে সামনে রেখে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে দিল্লি। দেশটির এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নানা গোষ্ঠী যুক্ত থাকতে পারে।
বিশ্লেষকরা আরো বলেন, মামলার রায়ে হাসিনার সাজা হলে ভারত এক ধরনের চাপে পড়বে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রায়ের আগেই হাসিনার এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার করার উদ্যোগ নিল দিল্লি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে হাসিনার সাক্ষাৎকারকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন চাল ও ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে আগামী মাসেই হাসিনার মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এই রায় ঘোষণাকে সামনে রেখে বাংলাদেশকে নতুন করে অস্থিতিশীল করতে চাইছে ভারত। এছাড়া আমরা এখন সংকটময় সময় পার করছি। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন ও সংস্কারসহ নানা ইস্যুতে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। এই ঘোলাটে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে দিল্লি।
ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, ভারতের এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে দেশীয় চক্রান্তকারীদেরও যোগসূত্র আছে। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দীনকে হাসিনার সাক্ষাৎকার নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করতে দেখেছি। আমি মনে করি, খালেদ মহিউদ্দীনসহ আওয়ামী লীগের পক্ষে সাফাই গাওয়া সাংবাদিকদেরও গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত।