বিশ্বকাপের টানা দুই আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ে নিজেদের খেলার ধরনটাই বদলে ফেলেছে জার্মানি। হেড কোচ জোয়াকিম লোর চেয়ারে এখন আছেন জুলিয়ান ন্যাগেলসম্যান। তার অধীনে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৬ ম্যাচের পাঁচটিতেই জয় নিয়ে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে জার্মানরা। আগের দুই আসরের মতো খানিকটা কঠিন পর্বে আছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ইউরোপের এই দলটির সঙ্গে একই গ্রুপে আছে ল্যাতিনের ইকুয়েডর, আফ্রিকার আইভরি কোস্ট ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়া কুরাসাও।
কুরাসাওকে নিয়ে ভয় কম থাকলেও জার্মানিকে চিন্তা করতে হবে ইকুয়েডর ও আইভরি কোস্টকে নিয়ে। কারণ, জুলিয়ান ন্যাগেলসম্যানের অধীনে নিজেদের মানিয়ে নিলেও দুর্বলতা মাঝেমধ্যেই ফুটে ওঠে। এটাই তাদের জন্য হতে পারে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ কাটাতে বাড়তি চাপ নিতে হবে কাই হাভার্জ, জামাল মুসিয়ালা ও টিমো ওয়ার্নারদের। সেই চাপ কতটুকু নিতে পারে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।
অন্যদিকে ইকুয়েডরও আছেন দারুণ ছন্দে। কনমেবল অঞ্চল থেকে বাছাইপর্বে পয়েন্ট তালিকায় দুই নম্বরে থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে ইকুয়েডর। শেষ ১৮ ম্যাচে দলটি করেছে ১৪ গোল। দলটির রক্ষণে পিএসজিতে খেলা উইলিয়ান পাচো, আর্সেনালে খেলা পিয়েরো হিনক্যাপি ও চেলসিতে খেলা ময়সেস ক্যাইসেডো। ফলে এই গ্রুপের দলগুলোর জন্য ইকুয়েডরের জালে বল জড়ানো খানিকটা কঠিনই হবে।
অন্যদিকে ২০২৩ সালে আফ্রিকান নেশন্স কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আইভরি কোস্ট। কোচ এমার্স ফাইয়ের হাত ধরে দলটি কয়েক বছর ধরেই আছে দারুণ ছন্দে। ঘরের মাঠে আফ্রিকান নেশন্স কাপ জয়ী দলটি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ২৫ গোল করে হজম করেনি একটিও। ফলে তারাও প্রতিপক্ষকে উপহার দেবে কঠিন সময়। দলটির হয়ে মাঠ মাতাতে প্রস্তুত হচ্ছেন প্রিমিয়ার লিগে খেলা আমাদ দিয়োলো, সাইমন আদিনগ্রা ও নিকোলাস পেপেরা। এছাড়া তরুণ আরবি লাইপজিগে খেলা ইয়ান ডিয়োমোন্ডেও আছেন।
এই গ্রুপে খানিকটা দুর্বল দল প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলতে আসা কুরাসাও। বিশ্বকাপে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা দলটিতে নেই বড় কোনো তারকা। তবে ইউরোপে খেলা বেশ কয়েকজন ফুটবলার আছেন। এদের মধ্যে আছেন তুরস্কে খেলা দুই ফুটবলার লিয়ান্দ্রো বাকুনা ও জুনিনহো বাকুনা। তাদের আবার আছে প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা। ফলে তাদের ওপর খানিকটা ভরসা করবে কুরাসাও। দুজনের কারো অবশ্য কুরাসাওতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা নয়। তাদের ফুটবলে হাতেখড়ি নেদারল্যান্ডসে। এমনকি জুনিনহো বাকুনা খেলেছেন এছাড়া নেদারল্যান্ডস অনূর্ধ্ব ২১ দলে। দলটির হয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে লিয়ান্দ্রো বাকুনার। দলটিতে থাকা বেশির ভাগ ফুটবলারই থাকেন নেদারল্যান্ডসে। সেখানকার বিভিন্ন স্থরের লিগে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে যাবেন তারা। ফলে- এবারের বিশ্বকাপে তাদের পারফরম্যান্স কেমন হয় সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।