চীনের সবচেয়ে বড় ও উন্নত বিমানবাহী রণতরী ‘ফুজিয়ান’ আনুষ্ঠানিকভাবে নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনী হিসেবে চীন এখন প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বড় পদক্ষেপ নিল বলে বিশ্লেষকদের মত।
ফুজিয়ান হলো চীনের তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী, তবে এটি প্রথম যা সম্পূর্ণভাবে দেশেই নকশা ও নির্মাণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি (CCTV) জানিয়েছে, জাহাজটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপাল্ট সিস্টেম, যা আগের মডেলগুলোর তুলনায় ভারী যুদ্ধবিমান উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম।
বুধবার হাইনান দ্বীপের সামরিক বন্দর থেকে অনুষ্ঠিত কমিশনিং অনুষ্ঠানে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দুই হাজারেরও বেশি নৌ কর্মকর্তা ও প্রকৌশলী অংশ নেন।
চীনের আগের দুই রণতরী — লিয়াওনিং ও শানদং — উভয়ই ‘স্কি-জাম্প’ ধরণের উড্ডয়ন পদ্ধতিতে তৈরি, যা ভারী যুদ্ধবিমান বা বড় সহায়ক বিমান বহন করতে সীমাবদ্ধ। লিয়াওনিং মূলত সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি রণতরী, আর শানদং সেই মডেল অনুসরণে নির্মিত চীনা সংস্করণ।
ফুজিয়ানের ফ্লাইট ডেকে তিনটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপাল্ট স্থাপন করা হয়েছে, যা সিসিটিভি প্রতিবেদনে “বিশেষভাবে লক্ষণীয়” বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন এই রণতরীতে দেখা গেছে চীনের সর্বাধুনিক বিমান — স্টেলথ ফাইটার জে-৩৫, ভারী ফাইটার জে-১৫টি এবং প্রারম্ভিক সতর্কতা বিমান কে জে-৬০০।
সি চিন পিং-এর নেতৃত্বে চীনের নৌবাহিনী দ্রুত আধুনিকায়নের পথে এগোচ্ছে। বেইজিং জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য ২০৩৫ সালের মধ্যে সামরিক আধুনিকায়ন সম্পন্ন করা এবং ২০৪৯ সালের মধ্যে “বিশ্বমানের” সেনাবাহিনী গঠন করা— যা হবে কমিউনিস্ট শাসনের শতবর্ষ পূর্তির বছর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফুজিয়ানসহ চীনের তিনটি রণতরী ভবিষ্যতে তাইওয়ান নিয়ে সম্ভাব্য সংঘাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে, যদিও দ্বীপটি একটি স্বশাসিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত।
এসআর