ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় জনবহুল রাজ্য বিহারের প্রাদেশিক বিধানসভায় গত ৬ ও ১১ নভেম্বর দুই দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার এ নির্বাচনের ফল প্রকাশ করা হয়। নির্বাচনে ২৪৩টি আসনের মধ্যে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বের এনডিএ জোট ২০২টি আসনে জয়লাভ করে। অপরদিকে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজিডি) নেতৃত্বের এমজিবি জোট মাত্র ৩৫টি আসন অর্জন করে।
এদিকে এ নির্বাচনে বিধানসভার সদস্য হিসেবে মাত্র ১০ জন মুসলিম নির্বাচিত হন, যা ১৯৯০ সালের পর সবচেয়ে কম।
২০২২-২৩ সালের জরিপ অনুযায়ী, বিহারের ১৩ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ১৭.৭ শতাংশ মুসলমান। কিন্তু বিহারের সাম্প্রতিক নির্বাচনে এনডিএ ও তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এমজিবি জোট ২০২০ সালের তুলনায় খুব কম মুসলিমকে প্রার্থী করে।
নির্বাচনে দুই জোটের বাইরে থাকা কেন্দ্রীয় লোকসভার সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়েসির অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) ২৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, যার মধ্যে ২৩ জন ছিলেন মুসলিম। এর মধ্যে তারা পাঁচটি আসনে জয়লাভ করেন। রাজ্যপ্রধান আখতারুল ইমান মুসলিম অধ্যুষিত আমুর থেকে জয়লাভ করেন। এছাড়া আরারিয়া, পুর্নিয়া, কাটিহার ও কিশানগঞ্জের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে দলটি ভালো ফলাফল করে।
এছাড়া এনডিএ জোটের অধীন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের জনতা দল থেকে মাত্র চার মুসলিমকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়। এর মধ্যে বিদায়ী সরকারের সংখ্যালঘু কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ জামা খান জয়লাভ করেন। জোটের অপর দল লোকজনশক্তি পার্টি মাত্র একজন মুসলিম প্রার্থী মোহাম্মদ কলিমউদ্দিনকে দাঁড় করিয়েছিল। কিন্তু কিশানগঞ্জে এআইএমআইএমের প্রার্থী তাওসিফ আলমের কাছে তিনি পরাজিত হন।
বিরোধী এমজিবি জোটের প্রধান দল আরজিডি ১৮ মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল, যার মধ্যে দুজন জয়লাভ করেছেন। এছাড়া জোটের শরিক ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ১০ মুসলিম প্রার্থীর মধ্যে দুজন জয়লাভ করেছেন।
এর আগে ২০২০ সালের নির্বাচনে ১৯ মুসলিম প্রার্থী বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার আগে ২০১৫ সালের নির্বাচনে সদস্য হয়েছিলেন ২৪ মুসলিম প্রার্থী। ২০১০ সালে ১৯ মুসলিম প্রার্থী জয়লাভ করেন; যার মধ্যে বিজেপির এক প্রার্থী ছিলেন। ১৯৯০ সালে অখণ্ড বিহারে ৩২৪ আসনে ১৭ মুসলিম প্রার্থী জয়লাভ করেন।