হোম > বিশ্ব

‘তাদের যেখানেই পাবে, গুলি করবে’, ফোনালাপে শেখ হাসিনা

বিবিসির প্রতিবেদন

আমার দেশ অনলাইন

ছবি: বিবিসি

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভুত্থানে বাংলাদেশে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমনে সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিবিসি আই শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া একটি ফোন কল যাচাই করে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

মার্চ মাসে অনলাইনে ফাঁস হওয়া অডিওতে হাসিনা তার নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার’ করার অনুমতি দিয়েছেন। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে বলেন, ‘তাদের যেখানেই পাবে, গুলি করবে।’

বিবিসির তথ্যমতে, বাংলাদেশ সরকারের টেলিযোগাযোগ নজরদারি সংস্থা এনটিএমসি এই কলটি রেকর্ড করা হয়েছিল। কলটি হাসিনার ঢাকার বাসভবন গণভবন থেকে ১৮ জুলাই করা হয় বলে বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র।

জাতিসংঘের তদন্ত অনুযায়ী, গত বছরের বিক্ষোভে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হন। সেই ঘটনার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। যেখানে তিনি অনুপস্থিত অবস্থায় অভিযুক্ত। হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন এবং তার দল আওয়ামী লীগ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘এই ফোন কল থেকে কোনো বেআইনি উদ্দেশ্যের প্রমাণ মেলে না। এটি প্রতিক্রিয়া মাত্র।’

তবে বিবিসি ও ফরেনসিক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট কলটির প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত করেছে- এটি কৃত্রিম নয়, কোনোভাবে কাটাছেঁড়া বা পরিবর্তন করা হয়নি। হাসিনার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে এটি পুরোপুরি মিলে গেছে বলেও জানায় বাংলাদেশের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

১৮ জুলাইয়ের এই কলের পর ঢাকার রাস্তায় সামরিক-গ্রেডের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, যা পুলিশের গোপন নথিতে উল্লেখ রয়েছে। বিবিসি আরো জানিয়েছে, ৫ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হয়। এর আগে ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছিল ৩০ জন।

ঘটনার দিন সেনাবাহিনী সরে যাওয়ার পরপরই পুলিশ সরাসরি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়। ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি, ড্রোন ও প্রত্যক্ষদর্শীর ভিডিও বিশ্লেষণ করে এ তথ্য উঠে আসে।

ঘটনার পর প্রতিবাদকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় হামলা চালালে ছয়জন পুলিশ সদস্যও নিহত হয়।

বাংলাদেশ পুলিশের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানায়, গত বছরের সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬০ পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত চলছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করেছে।

শেখ হাসিনার বিচার গত মাসে শুরু হয়েছিল। এই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা, উসকানি, ষড়যন্ত্র এবং বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে ভারত এখনো তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে রাজি হয়নি।

জাতিসংঘের তদন্তেও শেখ হাসিনা ও তার সরকারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের যুক্তিসংগত প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও আওয়ামী লীগ তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বলছে, “আমাদের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে, সেগুলো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এবং প্রাণহানি রোধের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছিল।”

বিবিসি এ নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো মন্তব্য পায়নি।

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ শাসন করছে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। তবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা এখনও অনিশ্চিত।

আরএ

ধসে পড়ল ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টির’ ১১০ ফুট উঁচু রেপ্লিকা

সেই মুসলিমকে ‘জাতীয় হিরো’ আখ্যা দিয়ে যা বললেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

অস্ট্রেলিয়ায় হামলাকারী সেই বন্দুকধারী আসলেই পাকিস্তানি নাকি ভারতীয়

নিজ আকাশসীমার কাছে অজ্ঞাত ড্রোন ভূপাতিত করলো তুরস্ক

মেসির সফরে বিশৃঙ্খলার জেরে পদত্যাগ করলেন পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রী

এবার ভারতীয় রুপির রেকর্ড দরপতন

জিমি লাইয়ের সাজায় দুঃখিত ট্রাম্প, মুক্তি দিতে জিনপিংকে অনুরোধ

৪০ দিনের বেশি অনশনে গুরুতর অসুস্থ ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ বিক্ষোভকারীরা

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে প্রযুক্তি চুক্তি স্থগিত করল ট্রাম্প

নারী চিকিৎসকের হিজাব টেনে খুললেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী