অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ‘সুপারবাগ’ বিস্ফোরণ
ভারত বর্তমানে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জীবাণুর “সুপারবাগ বিস্ফোরণ”-এর মুখোমুখি। হাসপাতালে আসা রোগীদের ৮৩%–এর শরীরে ইতিমধ্যেই ওষুধ-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। বিষয়টি উঠে এসেছে চিকিৎসাবিজ্ঞানের শীর্ষ জার্নাল দ্য ল্যানসেট-এ প্রকাশিত একটি বৈশ্বিক গবেষণা প্রতিবেদনে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) মোকাবিলায় ভারত “গুরুত্বপূর্ণ টিপিং পয়েন্টে” পৌঁছে গেছে। অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার—ফার্মেসিতে প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি, কৃষি ও পশুপালনে ওষুধের ব্যাপক প্রয়োগ—এই পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।
গবেষণায় ভারত, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডসে ১,২০০ হাসপাতালে ভর্তি রোগী বিশ্লেষণ করা হয়। ফলাফলে দেখা যায়, ভারতীয় রোগীদের মধ্যে প্রতিরোধী জীবাণুর হার ৮৩%, ইতালিতে ৩১.৫%, যুক্তরাষ্ট্রে ২০% এবং নেদারল্যান্ডসে ১০.৮%। গবেষণায় শনাক্ত করা অনেক জীবাণুই শেষ পর্যায়ের বা সঙ্কটাপন্ন রোগীর জীবন বাঁচাতে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিও প্রতিরোধী। এগুলো ধরা পড়ে সাধারণ ইআরসিপি এন্ডোস্কোপি পরীক্ষার সময়—যেখানে একটি জীবাণুমুক্ত নমনীয় ক্যামেরা (ডুওডেনোস্কোপ) মুখ দিয়ে প্রবেশ করিয়ে রোগীর অগ্ন্যাশয়, যকৃত ও পিত্তথলি পরীক্ষা করা হয়।
গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. ডি. নাগেশ্বর রেড্ডি জানান, আগে সহজে সেরে যাওয়া সংক্রমণ এখন দীর্ঘায়িত ও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। “যে নিউমোনিয়া আগে চার দিনে সেরে যেত, এখন ৮–১০ দিন সময় লাগে—কখনও কখনও ওষুধে প্রতিক্রিয়া হয় না। এই জীবাণু রক্তে প্রবেশ করে সেপসিস সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে ভারতের উচ্চ সেপসিস মৃত্যুহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে,” তিনি বলেন।
এসআর