নির্বাচনি উত্তাপ তীব্র হচ্ছে সুনামগঞ্জ- ২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে। বিএনপির বর্ষীয়ান রাজনীতিক, সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন চৌধুরী মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই এলাকায় ভোটের প্রতিযোগিতা আরো জমে উঠেছে। এ আসনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন জামায়াত প্রার্থী সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শিশির মনির।
দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম, বাজার ও উঠান বৈঠকে ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে আসা শিশির মনির ইতিমধ্যেই তরুণ থেকে শুরু করে সকল বয়সের ভোটারদের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। পরিবর্তনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী তিনি বিএনপির প্রার্থীর শারীরিক অসুস্থতার সময় তার বাড়িতেও গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন।
এদিকে ধানের শীষের মনোনয়ন ঘোষণার পর নাসির উদ্দিন চৌধুরী শিশির মনিরকে ‘রাজাকারের ছেলে’ বলে উল্লেখ করে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, চা-বিস্কুট খাওয়ানো, এলাকায় ঢং তামাশা করা—এসব দিয়ে মানুষের মন জয় করা সহজ নয়। তার নির্বাচিত হওয়া কঠিন।
এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শিশির মনিরের মিডিয়া সেল থেকে ৫ মিনিটের ভিডিও বার্তা প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে তিনি নম্রভাবে জবাব দেন।
শিশির মনির ভিডিওতে বলেন, জনাব নাসির উদ্দিন চৌধুরীর মনোনয়ন ঘোষণার পর আমি তাকে অভিনন্দন জানাই এবং দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। নির্বাচনের মাঠে প্রতিযোগিতা থাকবে, তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা, অসম্মান বা কটাক্ষ হবে না। আমি সর্বদা সম্মান প্রদানের পক্ষপাতী। আমরা একে অপরের কাছ থেকে শিখব, দেশ ও এলাকার জন্য ভালো করতে চাই। জনাব নাসির উদ্দিন চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুবিধায় ভুগেছেন, দেশের বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন। আশা করি তিনি সুস্থ হয়ে নির্বাচনের মাঠে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি ও দিরাই এলাকার বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশে ভেদাভেদের রাজনীতি চাই না। নতুন রাজনীতির সুচনা করতে চাই। দেশের মানুষ পুরাতন রাজনীতি এখন আর চায় না। সুনামগঞ্জ- ২ আসনে আমরা চাই সুষ্ঠু ও মর্যাদাপূর্ণ রাজনীতির চর্চা হোক। কাদা-ছোড়াছুড়ির রাজনীতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। নির্বাচনে প্রতিযোগিতা থাকবে, তবে তা হতে হবে আদর্শ ও সম্মানের সঙ্গে।
সচেতন মহলের মতে, সুনামগঞ্জ- ২ আসনে ভোটারদের কাছে প্রধান বার্তা হওয়া উচিত সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নৈতিক নির্বাচনের। ব্যক্তিগত আক্রমণ ও অপ্রীতিকর মন্তব্যের পরিবর্তে প্রার্থীদের উচিত তাদের নীতি, কর্মপরিকল্পনা এবং জনগণের কল্যাণে প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা।
শিশির মনিরের সংযমী আচরণ এবং তরুণ ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যেই নির্বাচনি পরিবেশকে নতুন রঙ দিয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, তার শালীনতা ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ এই আসনে ভোটারদের মন জয় করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
শিশির মনির বলেন, আমি গালাগালি নয় গলাগলি চাই। সব প্রার্থীকে এক মঞ্চে দেখতে চাই। আমি কারো সমালোচনা করিনা। নিরব থাকতে পছন্দ করি। নিরবতা হলো বড় শক্তি। এছাড়া আমার অনেক কাজ। কারো সমালোচনা করার সময় আমার নেই। আমি নাসির উদ্দিন চৌধুরীর সুস্থতা কামনা করি।

