হোম > সারা দেশ > রংপুর

ভাঙন ঠেকাতে প্রাকৃতিক বাঁধ

উপজেলা প্রতিনিধি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম)

প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদের ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জীবনের স্বপ্ন। নদী তীরবর্তী মানুষ প্রতিনিয়ত হারাচ্ছেন তাদের জীবিকা ও নিরাপত্তা। অথচ বছরজুড়ে সরকারি প্রকল্প কিংবা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কার্যকর উদ্যোগের দেখা মেলে না।

ফলে হতাশা, আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা তাদের নিত্যসঙ্গী। তবে এবার কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের খেরুয়ার চরের বাসিন্দারা গড়েছেন এক ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত। সরকারি সহায়তার অপেক্ষা না করে নিজেদের টাকায় ও শ্রমে তারা ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে গড়ে তুলছেন একটি ‘প্রাকৃতিক বাঁধ’।

তাদের বিশ্বাস এ উদ্যোগ অন্তত কিছুটা হলেও নদীভাঙন ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনব্যাপী স্থানীয় শতাধিক মানুষ একযোগে কাজ করেন খেরুয়ার চরের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে।

কলাগাছ, কাশফুল ও কলমি গাছের চারা রোপণ করে গড়ে তোলা হয় প্রাকৃতিক বাঁধের প্রাথমিক স্তর। স্থানীয়দের ধারণা, এসব গাছের বিস্তৃত শিকড় মাটিকে আঁকড়ে ধরে নদীর তীর শক্ত করবে, যা সময়ের সঙ্গে ভাঙন প্রতিরোধে প্রাকৃতিক এক বাঁধ হিসেবে কাজ করবে।

নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে বজরা দিয়ারখাতা, দক্ষিণ খাউরিয়ার চর ও ফেইচকা এলাকার অন্তত ১০০ পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছে। নদীতে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ও গাছপালা।

এখন ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য স্থাপনা। খেরুয়ার চরের বাসিন্দা দুলাল জোয়াদ্দার, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল করিম ও নুর হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে যাই।

বাড়ি হারিয়ে অন্যের জমিতে আশ্রয় নিতে হয়। তাই এবার অপেক্ষা না করে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছি। গাছ লাগালে অন্তত কিছুটা ভাঙন রোধ হবে এ বিশ্বাস থেকেই আমরা গাছ লাগাচ্ছি।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেন জানান, ‘ভাঙনের ঝুঁকি কমাতে এর আগেও এলাকাবাসী এমন উদ্যোগ নেয়। তবে এবার অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেশি এবং কাজটি অনেকটা সংগঠিতভাবে হয়েছে।

আশা করছি এর সুফল পাওয়া যাবে।’ এ মানবিক ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগে সহযোগিতা করেছেন কুড়িগ্রাম জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও জেলা জজ কোর্টের সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট মো. সাজ্জাদ হোসেন পলাশ।

তিনি বলেন, ‘এটি স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। তাদের অনুরোধে যতটা পেরেছি সহযোগিতা করেছি। মানুষ যদি নিজের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়, তবে পরিবর্তন আসবেই।

এ প্রকল্প সফল হলে ভবিষ্যতে আরো এলাকাজুড়ে এমন প্রাকৃতিক বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।’ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, ‘এটি ভালো উদ্যোগ। আমরা সরকারিভাবেও বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগাচ্ছি। ব্যক্তি বা বেসরকারি পর্যায়েও গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক বলেন, ‘এটি একটি ইতিবাচক ও সচেতন নাগরিক উদ্যোগ। সরকারি পর্যায়েও আমরা বিভিন্ন এলাকায় গাছ লাগানোর কাজ করছি। ব্যক্তি ও বেসরকারি পর্যায় থেকেও এমন উদ্যোগকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী-৩ মো. আব্দুল কাদের বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের গভীরতা হিসেবে এ ধরনের উদ্যোগ তেমন কোনো কাজে আসবে না। কেননা একটি গাছের শিকড় দুই-তিন বছরে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই ফুট হবে। ব্রহ্মপুত্র নদের ভেতরে দ্বীপচর হওয়ায় ভাঙন রোধে আপাতত সেখানে কোনো প্রকল্প হাতে নেই।’

মুফতি মুহিব্বুল্লাহ কি পতিত ফ্যাসিস্টদের দাবার গুটি?

বিকেলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিল, রাতে আড়াইহাজার ইয়াবাসহ যুবদল নেতা আটক

কুমিল্লায় চুরির অপবাদ দিয়ে কিশোরকে নির্যাতন যুবলীগ নেতার

তারাগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৭ সদস্যের লিখিত অভিযোগ

ছাত্রলীগের বিচারে গড়িমসি নোবিপ্রবি প্রশাসনের; ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগীরা

অপসো ফার্মার ৫০০ কর্মচারী একসঙ্গে ছাঁটাই

লোহাগাড়ায় ইয়াবা ও নগদ টাকাসহ নারী আটক

রাজারচরের ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের দাবি

বাঁশখালীতে প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান, দখল ফিরে পেলো মালিক পক্ষ

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে গোরস্তানে পাঠিয়েছেন: রিজভী