শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও ফেনীতে বিপি-জিপি (বেস্টেড প্রোপার্টিজ-গভর্নমেন্ট প্লিডার) পদে এখনো বহাল রয়েছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের জেলা তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আনোয়ারুল করিম ফারুক। বহাল তবিয়তে রয়েছেন সম্মিলিত আইনজীবী পরিষদের এ সাধারণ সম্পাদক।
জেলার তৎকালীন সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পুরো সময়জুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন ‘মামা ফারুক’ হিসেবে পরিচিত এ আওয়ামী আইনজীবী। চব্বিশের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘ডামি প্রার্থী’ হয়ে আলোচনায় আসেন নিজাম হাজারীর এ নিকটাত্মীয়। তখন থেকে তিনি ‘ডামি ফারুক’ নামে খ্যাতি পান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, চব্বিশের ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগে ১৫ বছর ধরে বিপি-জিপির দায়িত্ব পালন করছেন আনোয়ারুল করিম ফারুক। ২০১২ সালের জুন মাসে দলীয় বিবেচনায় তিনি বিপি-জিপি পদে নিযুক্ত হন। এর আগে সাবেক পিপি ও আইনজীবী সমিতির সভাপতি আকরামুজ্জামান এ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
আইনজীবীরা বলছেন, বিপি-জিপি প্রতি মাসে ১১ হাজার টাকা সম্মানী পান। এসব পদে থেকে মামলা প্রভাবিত করার মাধ্যমে বিপুল অংকের অর্থ অর্জনের সুযোগ থাকায় ক্ষমতাসীন দলের আইনজীবীদের কাছে এ পদটি খুবই লোভনীয়। তাছাড়া পদটি সম্মানজনক হওয়ায় বরাবর ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই এখানে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। দীর্ঘসময় ধরে আনোয়ারুল করিম ফারুক এ পদে থেকে সবাইকে ‘ম্যানেজ’ করে চলায় বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীদের প্রভাবশালী অংশ বিষয়টি নিয়ে নিশ্চুপ।
জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পার্থ পাল চৌধুরী জানান, বিপি-জিপি পদে ওনাকে পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়েছে।হয়তো প্রক্রিয়াগত কারণে সময় লাগছে।
জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর মেজবাহ উদ্দিন খাঁন জানান, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তিগত মামলার বাইরে সরকারি মামলা রয়েছে শুধুমাত্র ৩৫টি। অন্তবর্তী সরকার ফেনীতে পিপি-জিপি নিযুক্ত করার পর বিপি-জিপি নিয়োগ করতে বারবার তাগিদ দেয়া হয়েছে।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফাহমিদা হক জানান, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বিপি-জিপি নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।