কুমিল্লার সাব-রেজিস্ট্রার দীপঙ্করের জালিয়াতি
কুমিল্লায় প্রায় ১৫ কোটি টাকার বাড়ি ভুয়া দলিলের মাধ্যমে রেজিস্ট্রির অভিযোগ উঠেছে আদর্শ সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দীপঙ্কর দাসের বিরুদ্ধে। গত ৭ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আব্দুল বারেক।
জানা গেছে, চৌদ্দগ্রামের সাতবাড়িয়ার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে প্রবাসী আবদুল বারেক এই জাল দলিলের শিকার। তিনি কান্দিরপাড়ে নজরুল অ্যাভিনিউতে বিএস ৩২০৩ ও ৩২১০ দাগে ১৩ শতাংশ জমি কিনে সাততলা একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। তার ছবি ও স্বাক্ষর জাল করে জমিটি আরেকজন বিক্রি করে দেয়। দলিলে সদর দক্ষিণ উপজেলার আব্দুল করিম নামে একজন ভুয়া দলিল লেখকের নাম পাওয়া যায়, যার সনদ নম্বর দেখানো হয়েছে ৩৪। জমিটির ক্রেতা ঢাকার শান্তিনগরের উত্তর শাহজাহানপুরের নুরুল ইসলাম খানের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক।
নিয়ম অনুযায়ী সাব-রেজিস্ট্রার দাতা ও গ্রহীতার উপস্থিতিতে তাদের সঙ্গে আইডি কার্ড ও ছবি মিলিয়ে দেখে দলিলে স্বাক্ষর করবেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সাব-রেজিস্ট্রার তা অনুসরণ করেননি। তিনি দাতাকে অসুস্থ দেখিয়ে নিজ সহকর্মী গোলাপী রানী সাহাকে স্বাক্ষর আনার দায়িত্ব দেন। গোলাপী রানী লিমন নামে একজনের সাহায্যে আলেখারচর বিশ্বরোড এলাকার এক ব্যক্তির ভুয়া স্বাক্ষর আনেন । লিমন কুমিল্লা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মনজুরুল ইসলামের সহকারী।
গোলাপী রানী সাহা আমার দেশকে বলেন, দীপঙ্কর দাস আমাকে স্বাক্ষর আনার দায়িত্ব দেন। স্বাক্ষরের সময় দলিলদাতা ও গ্রহীতার অনুপস্থিতি এবং লিমনের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেন সাব-রেজিস্ট্রারের ওই সহকর্মী।
সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার লুৎফর নাহার লতা আমার দেশকে জানান, আমি ওই দিন ছুটিতে ছিলাম। দীপঙ্কর দাস দলিলটি রেজিস্ট্রি করেছেন। তিনি এ বিষয়ে বলতে পারবেন। আমার ছুটির সময় তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন ।
কর্মচারীরা জানান, দীপঙ্কর দাসের সদরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের দিন ২০০ থেকে ২৫০ দলিল রেজিস্ট্রি হয় আর লুৎফর নাহার লতার নিয়মিত দায়িত্ব পালনের দিনে হয় ৬০ থেকে ৭০টি। ব্যবধানের কারণ জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি দীপঙ্কর দাস।
তিনি আরো বলেন, দলিল জাল কি না, মামলা করলে বিচারক সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। দলিলটি কমিশনে হয়েছে। জমির মালিককে শনাক্ত করে স্বাক্ষর নেওয়ার দায়িত্ব কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিস সহকারী ও দলিল লেখকের।
কুমিল্লা জেলা রেজিস্ট্রার মনিরুল হাসান বলেন, আমি এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অফিসে গিয়ে এ বিষয়ে জেনে ব্যবস্থা নেব ।