দীর্ঘ ১৬ বছর পর উৎসবমুখর ভোটগ্রহণ চলছে ফেনী জেলা রেড ক্রিসেন্টের বহুল প্রতিক্ষিত নির্বাচন। শনিবার সকাল ১০টায় থেকে শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ১ হাজার ৬৯৭ জন ভোটারের এ নির্বাচন এখন জেলাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রূপ নিয়েছে। ৭ পদে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, এবি পার্টি, ইসলামী আন্দোলন ও স্বতন্ত্রসহ ৩২ প্রতিনিধি।
বড় নির্বাচনের ন্যায় স্বেচ্ছাসেবী এ সংস্থার নির্বাচনেও জেলা জুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। আর প্রার্থীদের মাঝে বাদ-প্রতিবাদ ও পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনের ঘটনাও ঘটেছে। বহু বছর পর ফেনী রেড ক্রিসেন্টের নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের ভোট প্রার্থনায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে যুগের পর যুগ নিরব থাকা সাধারণ ভোটাররা। সব শেষে সন্ধ্যায় জানা যাবে উত্তাপ ছড়ানো এ নির্বাচনে বিজয়ী হচ্ছেন কারা। তবে ভোটাররা বলছেন, এ নির্বাচনে তারা প্যানেল নয়; বরং স্বেচ্ছাসেবী মানসিকতা, সততা, যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখে ভোট দেবেন।
নির্বাচন কমিশন সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ২০০৯ সালে সর্বশেষ ভোটাভোটির মাধ্যমে ফেনী জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নির্বাচন হয়েছে। পরবর্তীতে ৩ বছর মেয়াদী এ কমিটির তফসিল ঘোষণার পর সকল পদে একক প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় ভোটাভোটির প্রয়োজন পড়েনি। দীর্ঘ ১৬ বছর পর নির্বাচনে গোপন ব্যালটে ভোট দেবেন সংস্থার আজীবন সদস্যরা।
নির্বাচনী তফসিল মোতাবেক ভোটাভোটির মাধ্যমে আগামী ৩ বছরের জন্য ফেনী রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে ১ জন ভাইস চেয়ারম্যান, ১ জন সেক্রেটারি ও ৫ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। ৭ পদে আজ ৩২ জন সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তন্মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জিয়া উদ্দিন আহমেদ মিষ্টার ও মুশফিকুর রহমান পিপুল প্রার্থী হয়েছেন। সেক্রেটারি পদে ৪ জন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হচ্ছেন- আ ন ম আবদুর রহীম, সালাহ উদ্দিন মামুন, রশিদ আহমেদ মজুমদার ও ডা. শহীদুল ইসলাম। এছাড়াও কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য পদে ৫ জনের বিপরীতে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যাচ্ছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়া উদ্দিন আহমেদ মিস্টার বলেন, বিগত সময়ে সংস্থার আজীবন সদস্যরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এবার যেহেতু ভোটের সুযোগ হয়েছে; সবাইকে কেন্দ্রে আসুন। ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন। পছন্দের মানুষটিকে নির্বাচিত করে প্রান্তিক মানুষের জন্য কাজ করতে এগিয়ে দিন।
সেক্রেটারি প্রার্থী আ ন ম আবদুর রহীম বলেন, নির্বাচনটি ছোট হলেও জেলাজুড়ে এর ভোটার রয়েছে। দীর্ঘদিন পর ভোটের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় ভোটারদের মাঝে একধরনের আবেগ-অনুভূতি দেখা দিয়েছে। যার কারণে কিছু উত্তাপও আমরা লক্ষ্য করেছি। আমার আবেদনকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসন ভোটের দিন তাৎক্ষণিক ডকুমেন্ট প্রদর্শনের মাধ্যমে ভোটার কার্ড ইস্যুর পদক্ষেপ নেওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তবে ভোটাররা জানিয়েছেন, নির্বাচনে কে কোন প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছে তা বিবেচনায় রাখা হচ্ছে না। প্রকৃতপক্ষে যার মাঝে স্বেচ্ছাসেবী মানসিকতা রয়েছে; যারা পূর্ব থেকেই বিপদে আপদে মানুষের পাশে ছিলেন এবং সততা, যোগ্যতা ও দক্ষতার মানদণ্ডে উন্নীত হতে পারবেন, তাদেরকেই আমরা নির্বাচিত করবো।