ফেনীর পরশুরামে নোয়াবাজার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ১০ বছর ধরে বন্ধ থাকায় ভূতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবাপ্রত্যাশী আট গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। কর্তৃপক্ষ বলছেন, জনবল সংকটের কারণে অর্ধশত বছরের প্রাচীন এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে। পরশুরাম পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর গুথুমা গ্রামের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। জানা গেছে, দেশ স্বাধীনের আগে পৌর এলাকার উত্তর গুথুমায় উত্তর অংশে নোয়াবাজার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু হয়। আশির দশকে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে উত্তর গুথুমা বাজারের কেবি আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি স্থানান্তর করা হয়। এ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সেবা নিতেন দক্ষিণ গুথুমা, উত্তর গুথুমা, বাগমারা, বাসপদুয়া, বেড়াবাড়িয়া, নরনীয়া, মুন্সীরখিল, জমিয়ারগাঁওসহ আট গ্রামের মানুষ।
পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অতিরিক্ত পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ইসরাত জাহান মুন্নি জানান, নোয়াবাজার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি পাকিস্তান আমলে তৈরি করা হয়েছে। পরবর্তীকালে জনবল সংকটের কারণে ২০২০ সালে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনটি বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।
কোথাও কোথাও ভবনের অংশ ভেঙে পড়ছে, দরজা-জানালা মরিচা ধরেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন মেডিকেল অফিসার, একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও একজন করে ফার্মাসিস্ট ও এমএলএসএস থাকার কথা রয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ থাকায় এসব গ্রামের মানুষদের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হচ্ছে।
জরুরি মুহূর্তে চিকিৎসার অভাবে অসুস্থদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ বিষয়ে ফেনী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম জানান, জনবল সংকটের কারণে এটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ২০২৪ ২৫ অর্থবছরে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একটি কক্ষকে পরিবেশযোগ্য করা হয়েছে। জনবল নিয়োগের মাধ্যমে দ্রুত এটি চালু করা হবে বলে তিনি জানান।