হচ্ছে না বার্ষিক পরীক্ষা
ময়মনসিংহে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই অস্বাভাবিক নীরবতা। কদিন আগেও যে আঙিনাগুলো শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল, সে সব এখন নীরব, নিস্তব্ধ।
শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি দ্বিতীয় দিনের মতো সবকিছুকে স্থবির করে দিয়েছে। প্রাথমিক স্তরে বার্ষিক পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক স্তরে বার্ষিক ও নির্বাচনি উভয় পরীক্ষাই থমকে আছে। শিক্ষা কার্যক্রমের এ অচল অবস্থা শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবার মধ্যেই তীব্র উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, নির্জন ক্লাসরুমগুলোতে কেউ নেই। যেসব অভিভাবক সকালবেলা সন্তানদের পরীক্ষাসংক্রান্ত খবর নিতে এসেছিলেন, তারা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। হঠাৎ করে পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভও তৈরি হয়েছে।
কর্মবিরতিতে থাকা শিক্ষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি চলমান বৈষম্যের প্রতিবাদে তারা আন্দোলনে নেমেছেন। চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন নিশ্চিত করা, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি তিন কর্মদিবসের মধ্যে আদেশ আকারে জারি করা।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, ৫৪ বছরের ইতিহাসে এটিই সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের সবচেয়ে বড় আন্দোলন এবং কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে কর্মবিরতি আরো দীর্ঘ হবে কি না।
বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি অবশ্যই পূরণ হওয়া উচিত, তবে পরীক্ষা চলাকালে হঠাৎ করে এমন কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের ওপর সরাসরি আঘাত করছে। তিনি মনে করেন, পরীক্ষার মাঝপথে পরীক্ষা স্থগিত করার এ ধরনের সিদ্ধান্ত অন্যায় ও অযৌক্তিক।
অন্যান্য স্কুলের অভিভাবকরাও জানান, শিক্ষার্থীরা কখনো পড়াশোনার দায়িত্ব ফাঁকি দেয়নি। অথচ শিক্ষকরা পরীক্ষা বন্ধ রাখায় সেই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎই অনিশ্চয়তায় পড়েছে। শিক্ষাব্যবস্থার এ অচলাবস্থা দ্রুত নিরসনের দ্রুত উদ্যোগ নিতে তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।