সাবেক অর্থ, পররাষ্ট্র ও ত্রাণমন্ত্রী, দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আবুল হাসান মাহমুদ আলী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন। তিনি ১৩ দিন ধরে সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসার সামনে জানাজা শেষে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। তিনি জুলাই বিপ্লবের পর থেকে পলাতক ছিলেন।
১৯৪৩ সালের ২ জুন দিনাজপুরের খানসামার ডাক্তারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মাহমুদ আলী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে ১৯৬৪ থেকে ৬৬ সাল পর্যন্ত সেখানে অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন।
পরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও বিদেশে বাংলাদেশের একাধিক মিশনে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কর্মজীবনে তিনি নিউইয়র্ক, নয়াদিল্লি ও বেইজিংসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ছিলেন। তিনি ভুটান এবং জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিদেশে দীর্ঘ কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন শেষে তিনি দেশে ফিরে ২০০১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং দ্রুত দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে জায়গা করে নেন। প্রথমে তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কমিটির সদস্য, পরে কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রথমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং পরে ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নবগঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তিনি ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৪ আসনে পুনরায় নির্বাচিত হন মাহমুদ আলী। তাকে আবার অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে পালিয়ে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আত্মগোপনে চলে যান মাহমুদ আলীও। তার নামে খানসামায় দুটি হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা আছে।