গত সাতদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। চারদিকে ঢেকে থাকা ঘন কুয়াশার ধূসর চাদরে ঢাকা। সেই সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় সৃষ্ট কনকনে শীতে গাইবান্ধার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও আকাশে সূর্যের দেখা মিলছে না।
শীতে যেন থমকে গেছে জনপদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন জেলার সাঘাটা, ফুলছড়িসহ বিভিন্ন চরের চরাঞ্চল সাধারণ মানুষ। কষ্ট জীবন যাপন করছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো।
এবারেী শীতে সবচেয়ে বেশি কাবু করছে শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও খেটে খাওয়া মানুষদের। ভোরের কুয়াশা ভেদ করে জীবিকার সন্ধানে বের হওয়া রিক্সা-ভ্যানচালক, দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক কিংবা হাট-বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছেন।
এলাকার অটোভ্যানচালক আব্দুল কাদের মিয়া প্রতিদিন ভোরে বের হন। কিন্তু যাত্রী মেলে না আগের মতো। শীতের কামড়ে হাত-পা জমে আসে।
তিনি বলেন, ভোরে বের হই, কিন্তু যাত্রী নাই। ভাত জোটে না, আর কাজ করলেও শরীর কষ্ট দেয়। তার মতো অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষ কনকনে ঠান্ডার মধ্যে কষ্টে দিন পার করছেন।
কুয়াশায় ঢাকা মাঠে ভোরের দিকে জমি দেখা যায় না। আমন ধান কাটা শেষ হলেও এখনও অনেক কৃষক খড় সংগ্রহ, জমি প্রস্তুতসহ নানা কাজে যুক্ত। তবে ঠান্ডায় শরীর অবশ হয়ে আসায় কাজে গতি নেই। দিনমজুরদের ক্ষেত্রেও কাজ কমে যাওয়ায় মজুরি অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।
নদীতীর ও চরাঞ্চলে শীত যেন আরও নির্মম। খোলা প্রান্তরে কুয়াশা ও হিমেল বাতাস সরাসরি আঘাত হানে। চরাঞ্চলের অনেক পরিবারে এখনও পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র নেই। পুরনো কম্বল কিংবা পাতলা চাদরেই রাত কাটাতে হচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং আগামী কয়েকদিন ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকতে পারে। এতে তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ২২ হাজার ৬০০টি কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং সাতটি উপজেলায় জনসংখ্যার ভিত্তিতে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।