হোম > জাতীয়

ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা দূর করার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের

এএইচআরবির আলোচনা সভা

স্টাফ রিপোর্টার

ওষুধশিল্প এখন দেশের প্রায় পুরো বাজারের চাহিদা পূরণে সক্ষম। তবে ওষুধ তৈরির মূল কাঁচামাল অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টের (এপিআই) ৯০ ভাগই এখনো আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ যেমন বাড়ছে, তেমনি আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে স্থানীয় উৎপাদন ও জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ছে। এই সংকট মোকাবেলায় স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল উৎপাদন বাড়াতে দ্রুত প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে এপিআই শিল্পের উন্নয়নে একটি স্থায়ী টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছেন তারা।

বুধবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের মিলনায়তনে অ্যালায়েন্স ফর হেলথ রিফর্মসের (এএইচআরবি) আয়োজিত ‘এপিআই শিল্পের উন্নয়নে নীতি ও বাস্তবায়ন কৌশল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এই তাগিদ দেন।

বিএমইউর ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও এএইচআরবির আহ্বায়ক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ।

তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে এপিআই উৎপাদন বাড়লে ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা আরো স্থিতিশীল হবে, উৎপাদন ব্যয় কমবে এবং দাম সাধারণ মানুষের নাগালে থাকবে। এজন্য এ শিল্পে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা, স্বল্প সুদের ঋণ ও ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালুর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ভারত ও চীনের মতো বাংলাদেশেও এই খাতে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির (বাপি) সভাপতি ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদি বলেন, ‘সরকার ২০১৭ সালের পর থেকে ওষুধের দাম সমন্বয় না করায় প্রায় ৭০ শতাংশ কোম্পানি নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির মুখে পড়েছে। মোট উৎপাদনকারী কোম্পানির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই এই অবস্থার শিকার। বাকি এক-তৃতীয়াংশের প্রবৃদ্ধি কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে।’

বাপি মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘শুধু কমিটি গঠন নয়, বাস্তবসম্মত নীতিগত সহায়তা দিতে হবে। ২০১৮ সালে এপিআই পার্কের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলেও এখনো অবকাঠামোগত সুবিধা অনিশ্চিত। বলা হচ্ছে, ২০২৫ সালে বিদ্যুৎ সংযোগ আসবে। এটি যত দ্রুত হবে দেশের ওষুধ খাতের চিত্র তত দ্রুত বদলাবে। কারণ, পোশাক খাতে ৩৫টি দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলেও ওষুধ খাতে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী তিনটি দেশ। তাদের অতিক্রম করা খুব বেশি কঠিন হবে না।’

বাংলাদেশ এপিআই অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়ারিস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএআইএমএ) সভাপতি সাইফুর রহমান বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখন এপিআই শিল্প উন্নয়নে কাজ করছে। আমাদের ভারত ও চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তাদের মতো আমাদেরও একটি স্থায়ী টাস্কফোর্স গঠন করা জরুরি, যা এ খাতের সমস্যাগুলো সমন্বিতভাবে সমাধানে কাজ করবে।’

গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ওষুধশিল্পে প্রতিযোগিতা বাড়বে। স্থানীয়ভাবে এপিআই উৎপাদন ছাড়া টিকে থাকা সম্ভব নয়। সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিলে বাংলাদেশ দ্রুতই আত্মনির্ভর হতে পারবে।’

বাপির কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ হালিমুজ্জামান জানান, ‘সরকারের উৎসাহে ৪৯০ কোটি টাকা লোন নিয়ে দুই বছর আগে কারখানা স্থাপন করেছি। এখন প্রতিদিন ২০ লাখ টাকা সুদ দিচ্ছি, কিন্তু গ্যাস পাচ্ছি না। এ অবস্থায় আর কেউ এপিআই পার্কে বিনিয়োগ করবে না।’

আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. আহমেদ এহসানুর রহমান বলেন, ‘এপিআই শিল্পের ৯০ ভাগ সমস্যা আমরা জানি। কিন্তু গত এক দশকে এর সমাধান হয়নি। আগে সরকার ও কোম্পানিগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক করতে হবে।’

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এটিএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান ওষুধ শিল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। স্থানীয় কোম্পানিগুলোর জন্য কাঁচামালের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এপিআই শিল্পের উন্নয়ন অপরিহার্য।’

ডাকসুতে হাসিনার আজীবন সদস্যপদ বাতিল

মুক্তি পেল ‘ট্রায়াল অব জুলাই ম্যাসাকার’ প্রামাণ্যচিত্র

এমপিওভুক্ত করার দাবিতে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি

হাসিনা ইস্যুতে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে বার্তা

যেখানেই আওয়ামী লীগ, সেখানেই প্রতিরোধ

বিপুল পরিমাণ সার, সয়াবিন তেল ও চিনি কিনবে সরকার

বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

৩০ বছরের জন্য বিদেশিদের হাতে যাচ্ছে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল

অন্তর্বর্তী সরকার শ্রমিকের সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: শ্রম উপদেষ্টা

ফ্ল্যাট-জমি হস্তান্তরে ফি নেওয়া যাবে না