ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্টে রথী-মহারথী-কিংবদন্তির মাইলফলকের গল্পের শেষ নেই। রেকর্ডের বইয়ে অধ্যায়ের পর অধ্যায়ে নানান কীর্তিগাথা। সেই কীর্তিগাথার একটা অধ্যায়ে বাংলাদেশের কেউ জায়গা করে নিয়েছে, বিষয়টা গৌরবেরই। ‘শততম টেস্টে সেঞ্চুরি’র অভিজাত অধ্যায়ে একাদশ ক্রিকেটার হিসেবে নাম তুলে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার কীর্তির সঙ্গে সেঞ্চুরি করে ঢুকে গেলেন ১৪৮ বছর বয়সি টেস্টের এলিট ক্লাবে। রিকি পন্টিং-জো রুটদের সঙ্গে এই অভিজাত ক্লাবের একাদশ সদস্য ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ খ্যাত মুশফিকুর।
শততম টেস্টে সেঞ্চুরির ক্লাবে সর্বপ্রথম নাম উঠেছিল ১৯৬৮ সালের ১১ জুলাই। ইংল্যান্ডের কলিন কাউড্রে নাম তোলার ৫৭ বছর ৪ মাস ৯ দিন পর সবশেষ এই তালিকায় নাম উঠল মুশফিকুরের। মাঝের সময়ে নাম তুলেছেন আরো ৯ জন। তালিকায় সবচেয়ে বেশি আছেন ইংল্যান্ডের, তিনজনÑকলিন কাউড্রে, অ্যালিচ স্টুয়ার্ট ও জো রুট। অস্ট্রেলিয়ার দুজনÑরিকি পন্টিং ও ডেভিড ওয়ার্নার। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এই ক্লাবে আছেন গ্রায়েম স্মিথ ও হাশিম আমলা। পাকিস্তানের পক্ষে আছেন ইনজামাম-উল-হক ও জাভেদ মিঁয়াদাদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে কীর্তিটি গর্ডন গ্রিনিজের।
ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটার কাউড্রে ১৯৬৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে এই রেকর্ডে নাম লেখান। খেলেছিলেন ১০৪ রানের ইনিংস। তালিকায় দ্বিতীয় নামটি ওঠে ২১ বছর পর, ১৯৮৯ সালে ভারতের বিপক্ষে শততম টেস্ট সেঞ্চুরিতে রাঙান পাকিস্তানের ‘বড়ে মিঁয়া’ খ্যাত জাভেদ মিঁয়াদাদ। পরের বছর ১৯৯০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শততম টেস্টে ১৪৯ রানের ইনিংস খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তি গ্রিনিজ। ২০০০ সালে উইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৫ রান করেন ইংল্যান্ডের আলেক স্টুয়ার্ট। ২০০৫ সালে পাকিস্তানের ইনজামাম উল হক ভারতের বিপক্ষে শততম টেস্টে করেন ১৮৪ রান।
পরের নামটি রিকি পন্টিং। এই তালিকায় একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ম্যাচের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি (১২০ ও ১৪৩*) হাঁকান অজি কিংবদন্তি। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজের শততম টেস্টের দুই ইনিংসেই এই কীর্তি গড়েন। পরের নামটি দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথের। পন্টিংয়ের সেঞ্চুরির ছয় বছর পর সপ্তম ক্রিকেটার হিসেবে ২০১২ সালে নিজের শততম টেস্ট ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্মিথ করেছিলেন ১৩১ রান। এরপর একই দলের হাশিম আমলা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জোহেন্সবার্গে তার শততম টেস্ট রাঙান ১৩৪ রানের ইনিংস খেলে।
তালিকার নবম ও দশম ক্রিকেটার ইংল্যান্ডের জো রুট ও অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার। দুজনই বাকিদের চেয়ে আলাদা। এই দুজনের নিজের শততম টেস্টে করেন ডাবল সেঞ্চুরি। ২০২১ সালে ভারতের বিপক্ষে চেন্নাইতে এই কীর্তি গড়েন রুট। ওয়ার্নার ২০২২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেন ঠিক ২০০ রান। আর সবশেষ এই ক্লাবে নাম লিখিয়ে একাদশ পূর্ণ করেন মুশফিকুর। এবার দেখার পালা দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবে কে নাম লেখান এই অধ্যায়ের খাতায়।
শততম টেস্টে সেঞ্চুরিয়ানরা
ব্যাটসম্যান প্রতিপক্ষ সাল
কলিন কাউড্রে অস্ট্রেলিয়া ১৯৬৮
জাভেদ মিয়াঁদাদ ভারত ১৯৮৯
গর্ডন গ্রিনিজ ইংল্যান্ড ১৯৯০
অ্যালেক স্টুয়ার্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০০০
ইনজামাম-উল-হক ভারত ২০০৫
রিকি পন্টিং দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০৬
গ্রায়েম স্মিথ ইংল্যান্ড ২০১২
হাশিম আমলা শ্রীলঙ্কা ২০১৭
জো রুট ভারত ২০২১
ডেভিড ওয়ার্নার দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২২
মুশফিকুর রহিম আয়ারল্যান্ড ২০২৫