গর্ডন গ্রিনিজ, ইনজামাম উল হক, রিকি পন্টিং, গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলাÑতাদের নামের পাশে উচ্চারিত হতে পারে মুশফিকুর রহিমের নামও। এই কিংবদন্তিদের সঙ্গে মুশফিকের নাম উচ্চারিত হতে দরকার শুধুমাত্র এক রান। ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করা মুশফিক সেঞ্চুরি পেলে নিজের শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটারদের তালিকায় উঠে যাবে তার নাম। বিশ্বের ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়ার অপেক্ষায় আছেন তিনি। এই কীর্তি গড়ার ভিতটা মুশফিক তৈরি করেছিলেন আজ সারা দিনে। প্রথম সেশনের শেষ সময়ে ব্যাটিংয়ে নামা মুশফিক গতকাল ক্রিজে ছিলেন মোট ২৫১ মিনিট। এ সময়ে ১৮৭ বল খেলেছেন তিনি।
দারুণ এই ইনিংসের ভিত গড়ার পথে মুশফিক খেলেননি কোনো ভুল শট। পুরো মুহূর্তে মনে হয়েছে বাড়তি আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে খেলছেন। যার প্রমাণ ২৫১ মিনিট ও ১৮৭ বলের ইনিংসে হাঁকান মাত্র ৫ চার। অর্থাৎ, ২০ রানের ছাড়া বাকি ৭৯ রান এসেছে প্রান্ত বদল করে। এমন দারুণ খেলতে থাকা মুশফিক হয়তো বাড়তি আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন পরিবারের উপস্থিতিতে নিজের শততম টেস্ট বলেই। সংবাদ সম্মেলনে এসে মমিনুল হক জানান, তার কাছে তেমন মনে হয়নি। বরং অন্য সব স্বাভাবিক দিনের মতোই খেলেছেন মুশফিক। এ নিয়ে মমিনুল বলেন, ‘উনি যখন ক্রিজে আসছিলেন, তখন তো শূন্য রানে ছিলেন, তখন থেকে দেখছিলাম কাম অ্যান্ড কোয়াইটভাবে খুব নরমাল ক্রিকেট খেলছিলেন, সিচুয়েশন বুঝে ব্যাটিং করছিলেন। তো পুরোটা ইনিংসেই কন্ট্রোল ছিল, কাম ছিল অনেক।’
ব্যাটিংয়ে সাধারণত সুইপ কিংবা রিভার্স সুইপে রান তোলায় বেশ পারদর্শী মুশফিক। এই টেস্ট শুরুর আগেও তাকে দেখা গেছে বিশেষভাবে সুইপ আর রিভার্স সুইপ নিয়ে কাজ করতে। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, গতকাল সুইপ কিংবা রিভার্স সুইপের প্রতি কোনো মনোযোগীই ছিলেন না মুশফিকুর রহিম। খানিকটা আত্মবিরুদ্ধ হলেও এমন ইনিংসে তিনি খুশিÑসেটা স্পষ্ট ছিল তার ব্যাটিংয়ে। দারুণ এই ইনিংস খেলার পথে দুটি বড় জুটিতেও সঙ্গী ছিলেন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে মমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে যোগ করেন ১০৭ রান আর লিটন দাসের সঙ্গে ৫ম উইকেট জুটিতে আসে ৯০ রান। বড় কীর্তির সামনে দাঁড়িয়ে নিজের শততম টেস্টকে আরো বেশি রঙিন করে তুলেছেন মুশফিকুর রহিম। সেই কীর্তি আরো সামনে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় আগামীকাল মাঠে নামবেন মুশফিক আর অপেক্ষায় থাকবে পুরো জাতি।