হোম > বিশ্ব

যুদ্ধ নয়, সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসের প্রকৃত কারণ জানালেন গবেষকরা

নতুন বৈজ্ঞানিক গবেষণা

আমার দেশ অনলাইন

ছবি: ডেইলি সাবাহ

নতুন বৈজ্ঞানিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার আকস্মিক পতন যুদ্ধ বা রাজনৈতিক উত্থানের কারণে নয়; বরং দীর্ঘস্থায়ী এবং তীব্র খরার কারণে হয়েছিল।

সিন্ধু সভ্যতা বিশ্বের প্রাচীনতম নগর-সভ্যতাগুলোর একটি, যা সিন্ধু নদের অববাহিকা ও তার আশপাশে (বর্তমান পাকিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম ভারত) খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০০ থেকে ১৩০০ সালের মধ্যে বিকাশ লাভ করেছিল। এটি উন্নত নগর পরিকল্পনা, ইটের ভবন, উন্নত নিষ্কাশন ব্যবস্থা, প্রাণবন্ত বাণিজ্য নেটওয়ার্ক এবং মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পার মতো শহরগুলোর জন্য সুপরিচিত ছিল। এখানে ছিল সুশৃঙ্খল রাস্তাঘাট ও স্নানাগার।

তারপরও হরপ্পার মতো শহরগুলো এক সময় পরিত্যক্ত হয়, যা ইতিহাসের একটি চিরস্থায়ী রহস্য হিসেবে রেখে গেছে।

কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বৈজ্ঞানিক জার্নালে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল গুহা, হ্রদ এবং জলবায়ু মডেল থেকে প্রাপ্ত প্যালিওক্লাইমেট প্রমাণ ব্যবহার করে এই অঞ্চলের প্রাচীন জলবায়ু কেমন ছিল তা নির্ধারণ করেছেন।

গবেষকরা এই এলাকায় চারটি তীব্র খরার প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন, প্রতিটি ৮৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়। যার ফলে ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাত কমে যায়, নদী ও মাটি শুকিয়ে যায়।

গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান লেখক হিরেন সোলাঙ্কি বলেছেন, ‘সবচেয়ে আশ্চর্যজনক আবিষ্কার হল, হরপ্পা সভ্যতার পতন কোনো একটি বিপর্যয়কর ঘটনার কারণে নয় বরং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বারবার, দীর্ঘ এবং তীব্রতর নদী খরার কারণে ঘটেছে।’

সহ-লেখক বালাজি রাজগোপালন বলেছেন, খাদ্য ঘাটতি এবং দুর্বল শাসনব্যবস্থা সম্ভবত এই খরার প্রভাবকে আরো জটিল করে তুলেছে, যা সম্প্রদায়গুলোকে ক্রমশ পতন এবং ছত্রভঙ্গের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

এই চাপ সত্ত্বেও সিন্ধু সমাজ শতাব্দী ধরে টিকে ছিল- ফসল পরিবর্তন করে, বসতি স্থানান্তর করে এবং বাণিজ্য নেটওয়ার্ককে বৈচিত্র্যময় করে।

সোলাঙ্কি আরো বলেন, ‘হরপ্পা সভ্যতা ফসল পরিবর্তন করেছিল, তাদের বাণিজ্যে বৈচিত্র্য এনেছিল এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে টিকে থাকতে বসতি স্থানান্তর করেছিল।’ তার মতে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তাদের নেয়া কৌশলগুলো আজকের বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা বহন করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম দিকে শীতল গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় তাপমাত্রার সঙ্গে যুক্ত ভারী বর্ষা অস্বাভাবিকভাবে আর্দ্র পরিস্থিতি তৈরি করেছিল যা সভ্যতার বিকাশে সহযোগিতা করে।

পরবর্তী শতাব্দীতে প্রশান্ত মহাসাগর উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিপাত কমতে থাকে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। ১৭৩৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে সবচেয়ে তীব্র খরার সময়কাল প্রায় ১৬৪ বছর স্থায়ী হয়েছিল এবং প্রায় পুরো অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ১৩ শতাংশ কমে গিয়েছিল।

গবেষণায় ব্যবহৃত হাইড্রোলজিক মডেলিং থেকে জানা যায়, হ্রদ সঙ্কুচিত হচ্ছে, নদীর প্রবাহ কমে যাচ্ছে এবং মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে।

রাজাগোপালান বলেন, ‘এর অর্থ হল আপনি আপনার নৌকা এবং বার্জগুলো সরাতে পারবেন না, আপনাকে নদীর গভীর অংশগুলি খুঁজে বের করতে হতে পারে।’

প্রধান জলপথ থেকে দূরে অভ্যন্তরীণ অঞ্চলেও কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গবেষণায় জড়িত নন এমন একজন ভূ-বিজ্ঞানী লিভিউ জিওসান, প্রাথমিক সভ্যতা গঠনে জলবায়ুর ভূমিকা বোঝার ক্ষেত্রে গবেষণাটিকে একটি বড় অগ্রগতি হিসাবে প্রশংসা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘কিছু আশ্চর্যজনক বিষয় রয়েছে, যেমন খরা কীভাবে সিন্ধু অঞ্চলে বসতি স্থাপনের স্থান বেছে নেয়াকে প্রভাবিত করেছিল। তারা বারবার জলবায়ু সংকটের মধ্যে এত দিন টিকে ছিল এটি খুবই উল্লেখযোগ্য বিষয় ।’

তবে গবেষকরা আধুনিক যুগের সঙ্গে একে সমান্তরালভাবে দেখার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছেন, যদিও ভারত ও পাকিস্তানও ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার সম্মুখীন হচ্ছে।

রাজাগোপালন বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিষয়ে গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে তা বোঝার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘একটি বড় মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হল, উষ্ণ জলবায়ুতে, গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগর কেমন হতে যাচ্ছে?’

সূত্র: ডেইলি সাবাহ

নতুন বাইজেন্টাইন: অস্থির বিশ্বের প্রেক্ষাপটে গ্রিস ও মধ্যপ্রাচ্যের সম্পর্ক

সামরিক অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়েছে: বেনিন সরকার

শান্তির জন্য ইসরাইল সরকারের পুনর্গঠন প্রয়োজন

গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় শিগগিরই শুরু: নেতানিয়াহু

ইউক্রেন, যুক্তরাজ্য ও জার্মান নেতাদের সঙ্গে সোমবার ম্যাক্রোঁর বৈঠক

চীন-জাপানের যুদ্ধবিমান সংঘর্ষে নতুন উত্তেজনা

হংকংয়ে আইন পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে

ইউক্রেন শান্তিচুক্তি ‘শেষ ধাপে’: মার্কিন দূত

বেনিনে সামরিক অভ্যুত্থান, সরকার বিলুপ্ত ঘোষণা

মাদুরোকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যেতে বললেন এরদোয়ান