তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান দেশটির ভূমিকম্পপ্রবণ দক্ষিণাঞ্চলে ২০২৩ সালের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নির্মিত ৪৫৫,০০০তম নতুন বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
হাতায় প্রদেশে ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে এরদোয়ান বলেন, “আজ আমরা এমন একটি বড় অর্জনের সাক্ষী হচ্ছি… যা বিশ্বের খুব কম দেশই করতে সক্ষম হতো।”
২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ তুরস্ক এবং উত্তরের সিরিয়ায় ৭.৮ এবং ৭.৫ মাত্রার দুইটি ভূমিকম্পে ৫৩,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয় এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
এরদোয়ান জানান, এই হস্তান্তরে হাতায় ৫৫,০০০-এর বেশি এবং কাহরমানমারাশে প্রায় ২২,০০০ ইউনিট প্রদান করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, মোট ইউনিট সংখ্যা তার আগের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৪৫৩,০০০-এর চেয়েও সামান্য বেশি।
প্রেসিডেন্ট বিরোধী দলগুলোকে “ভূমিকম্প পর্যটক” হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, তারা নির্বাচনের সময় এই দুর্যোগকে রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ব্যবহার করেছিল। তিনি বলেন, “যখন আমরা কঠোর পরিশ্রম করে ক্ষত সারাচ্ছিলাম, তখন কিছু অসাধু মানুষ শতাব্দীর এই দুর্যোগকে কাজে লাগাচ্ছিল। এখন তাদের কেউ নেই।”
এরদোয়ান আরও জানান, তার প্রশাসন প্রভাবিত প্রদেশগুলোর অবকাঠামোও পুনর্গঠন করেছে, যার মধ্যে আডিয়ামান এবং গাজিয়ানটেপ অন্তর্ভুক্ত।
আঞ্চলিক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তুরস্কের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তৃত পরিস্থিতির সঙ্গে সংযুক্ত। তিনি “রক্ত এবং বিশৃঙ্খলার ব্যবসায়ী”দের সতর্ক করেছেন, যারা অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে চায়।
এরদোয়ান বলেন, “তুরস্ককে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগোতে হলে শক্তিশালী শাসক দল এবং শক্তিশালী জনমৈত্রী প্রয়োজন। আমাদের নাগরিকদের সঙ্গে আমাদের হৃদয় ও সাংস্কৃতিক ভূগোলের সকল ভাই-বোনদের, বিশেষ করে সিরিয়া, ফিলিস্তিন ও ইরাকের, আমাদের প্রয়োজন।”
২০২৩ সালের এই ভূমিকম্প দুটি দশকে সবচেয়ে মারাত্মক ছিল। তুরস্কে একদিকে ৩৫,০০০-এর বেশি ভবন ধ্বসে গেছে, অন্যদিকে ২,০০,০০০ ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিরিয়ায় ধ্বংসের পরিমাণ এক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধ ও অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে জড়িয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে, বিশেষ করে আলেপ্পো ও ইদলিবে।
এসআর