অমর একুশে বইমেলায় ২০২৬-এ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তরুণ কবি এমদাদ হোসেনের নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘বেদনার দুর্দিনে তুমি আমার প্রার্থনা হও’। ব্যক্তিগত প্রেমের আখ্যানকে ছাড়িয়ে লোকায়ত কণ্ঠে উচ্চারিত অস্তিত্ববাদী বেদনার এই বই ইতোমধ্যে পাঠকমহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
কবি এমদাদ হোসেন তার নতুন কাব্যে প্রেম, নৈতিকতা, মানবমনের গভীরতা এবং জীবনের অনিত্যতাকে এমনভাবে তুলে ধরেছেন, যা একদিকে আবেগময়, অন্যদিকে দার্শনিক- এক দুর্লভ মিশ্রণ।
কৃত্রিমতা এড়িয়ে সরল কথোপকথনমূলক ভাষায় রচিত এ গ্রন্থে প্রেম শুধু সম্পর্কের গল্প নয়; এটি মানুষের মানসিক জটিলতা ও একাকিত্বের সার্বজনীন অভিজ্ঞতার প্রতিচ্ছবি।
কাব্যগ্রন্থে কবি প্রেমিকার মন বোঝার বিষয়টিকে তুলনা করেছেন “মহাকাশবিদ্যা বোঝার” সঙ্গে- যা আজকের প্রজন্মের মানসিক টানাপোড়েন ও সম্পর্কগত অনিশ্চয়তাকে নতুনভাবে তুলে ধরে। একই সঙ্গে ভালোবাসার নৈতিক মর্মবোধ নিয়ে তিনি দাঁড় করিয়েছেন এক নতুন সংজ্ঞা- যেখানে অধিকার নয়, সম্মান ও মুক্তিই প্রেমের কেন্দ্রবিন্দু।
এখান থেকেই জন্ম নেয় কবির আলোচিত ধারণা, ‘শুদ্ধতম পাপ’। তার ভাষায়, “মসজিদ, মন্দির কিংবা সুন্দর ফুল পোড়ানো নয়… হৃদয় পোড়ানোই পৃথিবীর সবচেয়ে শুদ্ধতম পাপ।”
বইটিতে অনিত্য জীবনের প্রতি এক অভিমানী দৃষ্টিও ফুটে উঠেছে। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে “মৃত্যু আর আমি”-র বিচ্ছিন্ন অবস্থানকে কবি যেভাবে তুলে ধরেছেন, তা কাব্যটিকে অস্তিত্ববাদী উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। পৃথিবীর বোঝা বইতে না পেরে নিজের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা জানাতে তিনি প্রার্থনা করেছেন- “আমাকে পাখা দাও” যা আত্মিক স্বাধীনতার এক শক্তিশালী প্রতীক।
সাহিত্য অনুরাগীরা মনে করছেন, লোকায়ত ভাষা ও গভীর দর্শনের সমন্বয়ে রচিত এই বইটি ২০২৬ সালের বইমেলায় তরুণ পাঠকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করবে। ‘বেদনার দুর্দিনে তুমি আমার প্রার্থনা হও’ শুধু একটি কাব্যগ্রন্থ নয়; এটি এক সংবেদনশীল শিল্পীর আত্মকথন, যিনি বেদনার আলোয় জীবনের কঠিন সত্যগুলোকে নতুনভাবে চিনতে শেখানোর চেষ্টা করেছেন।