হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

বিএনপি নেতার নেতৃত্বে উজাড় সন্দ্বীপ উপকূলীয় বনাঞ্চল

শামসুল আজম মুন্না, সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম)

সন্দ্বীপের উপকূলীয় বন কেটে সরকারি জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলমের বিরুদ্ধে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তার অনুসারীদের নিয়ে মগধরা ইউনিয়নের এলাকাজুড়ে বিস্তৃত বন রাতের আঁধারে কেটে উজাড় করছেন তিনি।

আর নদী ও সড়ক পথে এসব বনের গাছ স্থানীয় বিভিন্ন ইটভাটাসহ হাতিয়া ও সুবর্ণচরে পাচার করে দিচ্ছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এতে দ্বীপ উপজেলার প্রধান উপকূল রক্ষা বাঁধ মারাত্মক হুমকিতে পড়ে নদীভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি অর্থে লাগানো হাজার হাজার গাছ ধ্বংস হচ্ছে। হুমকিতে পড়ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মগধরা এলাকার বিস্তৃত বনটি ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর কোস্টাল গ্রীণবেল্ট প্রকল্পের মাধ্যমে বনায়ন করা হয়। যা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় অঞ্চলকে সুরক্ষা দেবে। অভিযোগ ওঠেছে, বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলম প্রকাশ্যে বন উজাড় করলেও উপকূলীয় বন বিভাগ, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারাও ভয়ে মুখ খুলছেন না। স্থানীয়ভাবে প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। গত শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মগধরা ইউনিয়নে দ্বীপ সুরক্ষা বাঁধ সংলগ্ন বন বিভাগের সৃজিত বনের প্রায় ২০ একর জায়গার কেওড়া ও অন্যান্য ম্যানগ্রোভ প্রজাতির হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সেখানে অসংখ্য গাছের গুঁড়ি দৃশ্যমান। কাটা গাছের গুঁড়ি ও ডালপালা বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এছাড়াও কাটা গাছের টুকরো কুড়াচ্ছেন স্থানীয় নারীরা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোশারফের অভিযোগ, গাছ কেটে বন উজাড়ের ঘটনায় বন বিভাগের কিছু অসাধু লোকজনের যোগসাজশ রয়েছে । আমরা অভিযোগ দেওয়ার পরেও বন বিভাগের কেউ ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেনি । এভাবে দীর্ঘদিন উপকূলীয় বনায়ন উজাড় হলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

সন্দ্বীপ চ্যানেল তীরবর্তী প্রতিরক্ষা-বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নদীভাঙনের ঝুঁকি ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাবে বলেও আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বেড়িবাঁধসংলগ্ন বাসিন্দা হাসিনা বেগম আমার দেশকে বলেন, ‘গত এক বছর ধরে বন উজাড় করা হচ্ছে। কিন্তু গেল তিন সপ্তাহ ধরে বনে প্রতিদিন গাছ কাটা হচ্ছে। বেড়িবাঁধের এক চা দোকানদার আমার দেশকে জানান, একটি গ্রুপ রাত ১১টা থেকে ভোর পর্যন্ত, আরেকটি একটি গ্রুপ ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বন কাটছে। সবই হচ্ছে বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলমের নেতৃত্বে। তিনি প্রভাবশালী বিএনপি নেতা হওয়ায় কেউ ভয়ে মুখ খুলছে না।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলম বলেন, ‘১৭ বছর বঞ্চিত থাকার পরেও নিজের জায়গার গাছ কাটতে অনুমতি নিতে হবে কেন? তিনি দাবি করে আশেপাশের ১০ কানি জমি তার লীজ নেওয়া। এছাড়া সেখানে তার মালিকানাধীন আরো জমি রয়েছে। তবে বন বিভাগ ইদ্রিসের এ দাবি মানতে নারাজ। সন্দ্বীপ উপজেলা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, ‘কেউ যদি বন বিভাগের সৃজিত বাগানের কোনো অংশ নিজের সম্পত্তি বলে দাবি করে।

তাকে প্রথমে লিখিত আবেদন করতে হবে। আবেদনের পর জমি জরিপ করে প্রক্রিয়া অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে। অনুমতি ছাড়া বন বিভাগের গাছ কাটলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী দণ্ড দেওয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ থাকলেও গাছ কাটা যাবে না। যাচাই-বাছাই শেষে মালিকানা প্রমাণ হলে তবেই জমি বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মংচিংনু মারমা আমার দেশকে জানান, বন বিভাগের তদন্তে ঘটনাটি প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

তারেক রহমানকে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদ, উপজেলা আহ্বায়কের বহিষ্কার দাবি

মীর মুগ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে কালি দিলো দুর্বৃত্তরা

রামগঞ্জে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যা

হাইমচরে আমনের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

৩১ দফার ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ তৈরি হবে: লায়ন হারুন ‎

চট্টগ্রামের ৭০% ভবনই ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে

শতবর্ষী মা সহিনার খোঁজ নেন না তিন সন্তান

সাপ আতঙ্কে বন্ধ মেঘনার সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়

সীতাকুণ্ডে মাইকে ঘোষণা দিয়ে জামায়াত নেতাদের ধাওয়া করলেন গ্রামবাসী

পাহাড়ে সংঘাত থামিয়ে ভ্রাতৃত্বের ডাক