সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথর থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে রাতভর অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। অভিযানে ধলাই নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থান থেকে ১২ হাজার ঘনফুট লুটের পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা পাথর পুনরায় ধলাই নদীতে ফেলা হয়েছে।
বুধবার রাত ১২টার পর থেকে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করে।
কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বলেন, বুধবার রাতে যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় অভিযান চালানো হয়। এসময় লুট হওয়া ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়। পরে ভোলাহাটের সাদা পাথর এলাকা ও ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে উদ্ধারকৃত পাথর প্রতিস্থাপন করা হয়।
এর আগে সন্ধ্যায় সিলেট বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সার্কিট হাউজে এক জরুরি সমন্বয় সভায় পাথর উদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও সভায় সাদা পাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী দায়িত্ব পালন করাসহ ৫ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। এতে স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, গোয়েন্দা বাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় গৃহীত পাঁচ দফা সিদ্ধান্ত
জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদা পাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনীর দায়িত্ব পালন; গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টে যৌথ বাহিনীর সার্বক্ষণিক উপস্থিতি; অবৈধ ক্রাশিং মেশিন বন্ধ ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান অব্যাহত রাখা; পাথর চুরির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতা আনা; চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হবে ।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২০২০ সাল থেকে সরকারি নির্দেশনায় বন্ধ থাকা সিলেটের সব কটি পাথর কোয়ারিতে গণলুট শুরু হয়। কয়েক হাজার পাথরশ্রমিক প্রকাশ্যে পাথর উত্তোলন শুরু করেন। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পৃষ্ঠপোষকতায় এ লুটপাট চলে।
তখন অন্যান্য পাথর কোয়ারিতে গণলুট চললেও তুলনামূলকভাবে পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথরে লুটপাট কম হয়। তবে গত ২৩ এপ্রিল থেকে সাদাপাথর এলাকায় আবার পাথর লুট শুরু হয়। গত এক সপ্তাহ দেদার লুটপাট চালিয়ে এলাকাটির প্রায় ৮০ শতাংশ পাথর তুলে ফেলা হয়।