হোম > ফিচার > তারুণ্য

স্বপ্নবাজ শিক্ষক

কামরুল হাসান

মীর তুহিন বিল্লাহ। জন্ম সাতক্ষীরা জেলার সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবনের নিকটবর্তী কালীগঞ্জ উপজেলায়। প্রকৃতির মায়ায়, মায়ের স্নেহে এবং আত্মীয়স্বজনের সাহচর্যে বেড়ে ওঠা। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে তার সান্নিধ্য তেমন পাওয়া হয়ে ওঠেনি। শৈশব থেকেই পড়ালেখায় ছিলেন অসম্ভব মেধাবী। সময়ের পরিক্রমায় একটি অনুপ্রেরণাময় নাম হয়ে উঠেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের এই শিক্ষক।

ছোটবেলা থেকেই তুহিন স্বপ্ন দেখতেন, সামরিক বাহিনীর অফিসার হবেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিংয়ে ভর্তি হলেও স্বপ্ন বাস্তবায়নে দুবার অংশ নিয়েছেন আইএসএসবি পরীক্ষায়; কিন্তু বিধি বাম, দুবারই হয়েছেন ব্যর্থ। তবে হাল না ছেড়ে অধ্যবসায় ও একাগ্রতায় ভর্তির সুযোগ পান হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে তার অ্যাকাডেমিক ফলাফলের ধারাবাহিকতা। প্রথম শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষার ফলাফলে কখনো দ্বিতীয় হননি। স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পেয়েছেন সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৪.০০ । এ ছাড়া পঞ্চম শ্রেণি, অষ্টম শ্রেণি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে রয়েছে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণিতে চারবার ডিনস অ্যাওয়ার্ড, ইউজিসি মেরিট স্কলারশিপ এবং সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক লাভ করেছেন। স্বপ্নবাজ এই শিক্ষক নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলতে ছেড়ে আসেন বহুজাতিক কোম্পানির লোভনীয় চাকরি।

স্নাতকোত্তর পর্ব শেষ করে বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন। দুটি কোম্পানিতে চাকরি করেছেন তিনি। সেখানে তিনি উপলব্ধি করলেন, শিক্ষার্থীদের চাকরির ক্ষেত্রে দক্ষ করে গড়ে তুলতে অ্যাকাডেমিক ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে এক ধরনের সেতুবন্ধ প্রয়োজন। সেই প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেই নিজ অভিজ্ঞতা ঢেলে দিতে যোগদান করেন শিক্ষকতা পেশায়।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পেয়েছেন পিএইচডি প্রোগ্রামের অফার। বিদেশে উচ্চশিক্ষা শেষ করে দেশে এসে শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে চান। তার মতে, এই দেশ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে ঋণী। এই দেশের সন্তান হিসেবে নিজের গবেষণালব্ধ জ্ঞান দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণার দুয়ার উন্মোচন করবে।

মীর তুহিন বিল্লাহ বিশ্বাস করেন, শিক্ষকতা শুধু একটি পেশা নয়, এটি মানবিক সমাজ বিনির্মাণের দায়বদ্ধতা। শিক্ষকতার মাঝে কঠিন ও কোমল উভয়ের সংমিশ্রণ থাকা আবশ্যক। একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গঠনের প্রেরণা জোগায়। তিনি চান মেধাবী ও উদ্যমী শিক্ষার্থীরা যেন শিক্ষকতা পেশায় আসে। তার মতে, একজন ভালো শিক্ষকের সবচেয়ে বড় গুণ হলো অধ্যবসায়, সততা, কাজের ধারাবাহিকতা এবং জ্ঞানার্জনের স্পৃহা।

উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তাদের প্ল্যাটফর্ম

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান

ডাকসু ঘিরে বিদ্বেষ বিভাজন ও অপরায়নের রাজনীতি

চুয়েটে বিতর্ক উৎসব

দুই ব্যাচের মিলনমেলা

তিনি সবার সেরা

প্রাণটাই দিলেন জিহাদ

কর্মবীর তরুণ সাগর

এক মানবিক অধ্যাপকের গল্প

বাহলুলের উদ্যোক্তা তৈরির গল্প